পদ্মা নদীর ভাঙনে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর ইউনিয়নের কলমিরচর গ্রামে ৩ দিনে ৪ শতাধিক বাড়ি ঘর, মসজিদ গাছ-পালা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ নিয়ে গত ২২ দিনের ভাঙনে গ্রামটির ৭শ' পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়া পদ্মা নদীর ভাঙনের সাথে নদীতে পড়ে ২ জন নিখোঁজের মধ্যে একজনের লাশ পাওয়া গেছে।
এদিকে, রবিবার ভাঙনকবলিত ৫শ' পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করছেন জেলা প্রশাসন।
হঠাৎ পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোত দেখা দেওয়ায় ব্যপক ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গত ৬ আগস্ট থেকে কলমিরচর গ্রামটিতে ব্যপক ভাঙন শুরু হয়। ১৩ আগস্ট ভাঙনে কলমিরচর বাজারটি বিলীন হওয়ায় ২৩০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়েছে।
২২ দিনে ৭শ' পরিবার ভাঙ্গনের শিকার হয়ে গৃহহীন হয়েছে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য দিকবিদিক ছোটাছুটি করছে আশ্রয়ের সন্ধানে। আশে পাশের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, পাকা স্থাপনা, ফসলী জমি হুমকির মুখে রয়েছে। ভাঙনের আতঙ্কে পরিবারগুলো তাদের বসত ঘরের জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। নদীতে স্রোত বেশি থাকার কারণে কোন নৌকা তীরে ভিড়তে পারছে না। কোন যানবাহন না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের ঘরের আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরাতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। আবার অনেকে শ্রমিকের অভাবে পাকা ও আধাপাকা ঘর সরাতে পারছে না। তারা সেগুলো ফেলে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
দীর্ঘদিনের বসতি বাড়ি ফেলে যাওয়ার সময় অনেক নারী পুরুষকে অঝোরে কান্না করতে দেখা গেছে। রবিবার সকাল ১০টার দিকে ভাঙনকবলিত এলাকায় ৫শ' পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসক।
এসময় তিনি নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে গ্রামবাসীকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানান এবং ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা ও পুনর্বাসনের আশ্বাস দেন। এছাড়া পানি উন্নয়ন বোডের কর্মকর্তা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণেরও জন্য আশ্বাস।
অশ্রুভরা চোখে ভাঙন কবলিতরা বলেন, বাড়িটুকু ছাড়া আমাদের আর কিছু নেই। শেষ আশয় বাড়িটা তাও পদ্মা নদীতে বিলিন হয়ে গেল। মানুষের অভাবে আমার বসত ঘরটি সরাতে পারছি না। কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেব আল্লাহই জানেন।
বিডি-প্রতিদিন/২৮ আগস্ট, ২০১৬/মাহবুব