ঈদ তাই ভাঁতির ফাসফুস আর হাঁতুড়ি পেটার ঠুকঠাক, টুং-টাং শব্দে মুখর এখন কামারশালাগুলো। কুরবানির পশুর মাংস কাঁটাকাটি আর চামড়া ছড়ানোর কাজে ব্যবহৃত চাপাতি, দা, ছুরি, বটিসহ কিছু ধারালো জিনিস তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এসব ধারালো অস্ত্র চাহিদামতো সরবরাহে কামার শিল্পীরা দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন।
ঈদ যত কাছে আসবে বিক্রি ততো বেশি হবে বলে জানান কামার শিল্পীরা। ঈদুল আজহার অন্যতম পশু জবাই করা। আর জবাই করার অন্যতম উপাদান এসব পণ্য।
বছরের অন্য সময়ের চেয়ে কুরবানির সময়টাতে কাজের চাপ অনেক বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় তাদের আয়-রোজগারও। তাদের বছরে দুর্দিন থাকলেও এখন সুদিন।
এখন সুদিন হলেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং প্রয়োজনীয় ব্যাংক ঋণ অভাবে দিনাজপুরে হারিয়ে যাচ্ছে এসব কামার সম্প্রদায়। বাধ্য হয়ে পৈত্রিক পেশা পরিবর্তন করছে অনেকে।
দিনাজপুর সদর উপজেলার নুলাইবাড়ী কামারপাড়া এলাকায় বসবাস বেশ কয়েকটি কামার পরিবারের। এছাড়াও চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর, সাতনালা, আলোকডিহি, তেঁতুলিয়া, সাইতীড়া, ইসবপুর ,ইউনিয়নসহ ১২টি ইউনিয়নে প্রায় ৬ শতাধিক কামার পরিবারের বাস। বীরগঞ্জ শহরেও বেশ কিছু কামার বসবাস করে। এক সময় এসব এলাকার মানুষের ঘুম ভাঙতো কামারের হাতিয়ারসহ অন্যান্য লোহার উপকরন তৈরীর ঠুংঠাং শব্দের সাথে। কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই।
রাণীরবন্দর খানসামা রোডের কামার শিল্পী গৌতম জানায়, সারা বছর তৈরি করা এসব পণ্য যত বিক্রি হয় না তার চেয়ে বেশি বিক্রি হয় ঈদ মৌসুমে তাই সামান্য লাভে বিক্রি করছি।
নশরতপুরের দেওদাপাড়ার রাজ কুমার রায় (৫৫) জানান, কামার শিল্পের অতিপ্রয়োজনীয় কয়লা, লোহা এবং ফাইলের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েছে।
বীরগঞ্জ পৌর শহরের কামার মো. শাহ আলম জানান, শুধুমাত্র কুরবানীর সময়টাতে তাদের ভাল চলে। বাকি সময়টাতে তাদের ব্যবসা ভালো চলে না।
দিনাজপুর সদর উপজেলার নিরব কর্মকার জানান, সরকারিভাবে তাদের জন্য কোন সহযোগিতা নেই। এই শিল্প হারিয়ে না যায় সেজন্য সরকারের সহযোগিতা ও ঋণের প্রত্যাশা করেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৯ আগস্ট, ২০১৬/ আফরোজ