পাবনায় গর্ভে সন্তান ধারণ করার অপরাধে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, গর্ভের সন্তানকে নষ্ট না করার অপরাধে ব্যাপক মারপিট করেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই গৃহবধূ মারা যায়। এ ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত গৃহবধূ জেলার আমিনপুর থানার আহমেদপুর ইউনিয়নের ভুলকুলিয়া গ্রামের আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী ও মাসুমদিয়া গ্রামের মাজেদ মোল্লার মেয়ে।
আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল হুদা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ধরনের একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তবে ঘটনাটি অন্য জেলায় হওয়ার কারনে আমরা বগুড়া সদর থানায় বিষয়টি অবহিত করি। তবে আমিনপুর থানায়ও ইউডি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আসলাম হোসেন নিহতের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, নিহতের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে। ময়নাতদন্তর রিপোর্ট হাতে পেলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
এ ব্যাপারে নিহত মেয়ের মামা দুলাল খাঁ বলেন, এক বছর পূর্বে আমার ভাগ্নি ও মাসুমদিয়া গ্রামের মাজেদ মোল্লার মেয়ে জাকিয়া খাতুনের (২৪) সাথে ভুলকুলিয়া গ্রামের মজিবর মন্ডলের ছেলে আব্দুল হাই মন্ডলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাকে ব্যাপক ভাবে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতেন স্বামী। সম্প্রতি জাকিয়া গর্ভে সন্তান ধারন করলে তার উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায় এবং গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্যে চাপ দিতে থাকে। মেয়েটি গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় গত সোমবার দিবাগত রাতে তাকে ব্যাপক ভাবে মারপিট করে, এতে সে অসুস্থ হয়ে পরে। এ সময় দ্রুত স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন কাশিনাথপুর জামালুর মাসুদ প্রাইভেট চেম্বারে নিয়ে যায়। তার অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তারা সেখান থেকে রেফার্ড করলে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করলে মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে মেয়েটি মারা যায়। বিষয়টি ছেলের বাড়ির পাশের লোকজন আমাদের অবহিত করেন।
এ ঘটনার পর পরই আমরা আমিনপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে ছেলে পক্ষ থেকে ঠান্টু কাজি ও নাসির প্রাং নামের দুই ব্যাক্তি মীমাংসার জন্যে আসে। আমারা আইনের বাহিরে যাব না বলে তাদের ফেরত দেই বলেও জানান মামা।
ঘটনার পর থেকেই ছেলের পরিবার ও ছেলে পলাতক রয়েছে বলেও জানান আমিনপুর থানার ওসি।
মেয়ের বাবা মাজেদ মোল্লা বলেন, আমি আমিনপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে বগুড়া যাচ্ছি মেয়ের মৃতদেহ আনতে, বলেই মুঠোফোনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/১৮ এপ্রিল, ২০১৭/মাহবুব