ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বর্দী ইউনিয়নের ময়েনদিয়া বাজারের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সুজন সরদার ও মান্নান মাতুব্বর গ্রুপের মধ্যে আজ শনিবার ফের সংঘর্ষ হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ৫ ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় চলা এ সংঘর্ষে ওসিসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল ও শট গানের গুলিবর্ষণ করে। সংঘর্ষের সময় বোয়ালমারী থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান, এসআই মো. সহিদুল ইসলাম, এসআই সুকুমার ও এসআই বোরাহান উদ্দিনসহ উভয় পক্ষের ২৫জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে মান্নান গ্রুপের জাহাঙ্গীর মিয়া (৩৫) ও সুজন গ্রুপের তালিব (২১), রুনু (৪০) ও টিটুলকে (২৫) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। বোয়ালমারী থানা পুলিশের সাথে পাশের সালথা থানা ও জেলার দাঙ্গা পুলিশের উপস্থিতে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
জানা যায়, শুক্রবারের সংঘর্ষের জের ধরে আজ শনিবার সকালে সুজন সরদারের পক্ষের পাশের সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউপি ৮নং ওয়ার্ড মেম্বর রেজাউল শেখ (৩০) ময়েনদিয়া বাজারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলতে গেলে মান্নান মাতুব্বরের লোকজন তাকে মারধর করে। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে সুজন সরদার ঢাল সড়কি সজ্জ্বীত কয়েকশত লোক নিয়ে মান্নান মাতুব্বরের শ্রীনগর গ্রামে হামলা চালায়। এ সময় ১০/১২টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ সময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুজন সরদারের মূল বাড়ি পাশের সালথা উপজেলা হলেও ময়েনদিয়া বাজারে নিয়ন্ত্রণ নিতে বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বর্দী ইউনিয়নে মোটরদিয়া গ্রামে বাড়ি করে। অপরদিকে পরমেশ্বর্দী ইউনিয়নের আ’লীগের সহসভাপতি মান্নান মাতুব্বর গত ১০বছর ধরে ময়েনদিয়া বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। গত ইউপি নির্বাচনে মান্নান মাতুব্বর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী নুরুল আলম মিনার কাছে পরাজিত হয়। এরপর থেকে নুরুল আলম মিনা ময়েনদিয়া বাজারে মান্নান মাতুব্বরের আধিপত্য খর্ব করতে সুজন সরদারকে আ’লীগে যোগদান করায়। এরপর থেকেই এলাকায় উভয় গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে।
সুজন সরদার জানান, মান্নান মাতুব্বরের লোকজন আমার দলের ময়েনদিয়া বাজারের ব্যবসায়ী রেজাউল শেখকে মারধর করলে তাকে উদ্ধার করতে গেলে সংঘর্ষ হয়।
এব্যাপারে মান্নান মাতুব্বরের ভাই আওয়ামী লীগ নেতা ছিদ্দিক মাতুব্বর বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। তারা শুধু শুধু আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
বোয়ালমারী থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, সংঘর্ষ থামাতে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল ও শট রাউন্ডের গুলি ছোড়া হয়। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/২২ এপ্রিল ২০১৭/এনায়েত করিম