ঝালকাঠির রাজাপুরের পাইলট বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শারমিন আকতার। নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর 'ইন্টারন্যাশনাল ইউমেন অব কারেজ-২০১৭' পুরস্কারে ভূষিত সেই শারমিন আকতার এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৩২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। এতো নির্যাতনের মুখেও 'এ' গ্রেডে পাস করে শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে শারমিন। এবার সে আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছে।
শিক্ষক ও এলাকাবাসী জানায়, এত ঝড়-ঝাপটার মধ্যেও জীবন সংগ্রামী মেয়েটির এ রেজাল্ট প্রশংসনীয়। তাই তাকে নিয়ে গর্ব করছে সহপাঠিসহ এলাকার মানুষ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল জানতে নিজের স্কুলে এলে শারমিনকে নিয়ে হৈচৈ পড়ে যায়। শারিমন জানায়, মায়ের বিরুদ্ধে মামলা না করলে তার পরীক্ষাই দেয়া হতো না। অনেক চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে এ ফলাফলেই সে সন্তুষ্ট। তবে এখন থেকে আরো পড়াশুনা করে আগামীতে একজন আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছে শারমিন। আর আইনজীবী হয়ে দেশের নির্যাতিত নারী পাশে দাঁড়ানোই হবে তার একমাত্র কাজ।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের আগস্টের শুরুর দিকে ৩২ বছরের এক পাত্রের সঙ্গে ১৫ বছরের শারমিনের বিয়ে ঠিক করে তার মা। বাল্যবিয়েতে রাজি না হওয়ায়, খুলনায় নিয়ে তাকে পাত্রের সঙ্গে এক ঘরে আটকে রাখা হয়। সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে আসেন শারমিন। পালিয়ে রাজাপুরে আসার পরও মা আর সেই যুবকের নির্যাতন সহ্য করতে হয় তাকে।
শেষে এক সহপাঠীর সহযোগিতায় রাজাপুর থানায় তার মা এবং ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করেন শারমিন। এনিয়ে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে খবর প্রচারের পর বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। অসীম সাহসিকতা ও অদম্য ইচ্ছার স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের 'ইন্টারন্যাশনাল ইউমেন অব কারেজ-২০১৭' পুরস্কারে ভূষিত হন শারমিন আকতার। গত ৩০ মার্চ মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের কাছ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট নেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/ ০৪ মে ২০১৭/আরাফাত