বরিশালে এক বাড়িওয়ালার হামলায় নিহত রং মিস্ত্রী আজাদ সিকদারের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে তার সহকর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর শেরে-ই বাংলা মেডিকেল চত্ত্বর থেকে নিহত আজাদের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি নগরীর বান্দ রোড, স্টেডিয়াম, জিলা স্কুল, বাংলা বাজার, সাগরদী হয়ে ধান গবেষণা রোডে গিয়ে শেষ হয়। এর আগে মেডিকেল চত্ত্বরে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন, নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতয়ালী) মো. আসাদুজ্জামান। তিনি এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতে সোপর্দ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
একদিন কাজে না যাওয়ায় গত ৩০ এপ্রিল রং মিস্ত্রী আজাদ সিকদারকে ধরে নিয়ে দেয়ালে মাথা ঠুকিয়ে অচেতন অবস্থায় একটি কক্ষে দুই ঘন্টা আটকে রাখেন ধান গবেষণা রোডের জনৈক কবির হাওলাদার। পরে সহকর্মীরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ৮টায় আজাদের মৃত্যু হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নির্মাণ শ্রমিকরা খন্ড খন্ড বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মেডিকেল চত্ত্বরে জড়ো হয়। মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে তার লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেন সহকর্মী শ্রমিকরা।
নিহত আজাদ নগরীর ধান গবেষণা রোডের কেরামত আলীর ছেলে। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে এবং ১ মেয়ের জনক ছিলেন। নিহতের বোন রেকসোনা বেগম অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা ক্ষমতাশালী হওয়ায় তাদের প্রভাবে চিকিৎসকরা গত ৪দিন ধরে আজাদের চিকিৎসায় অবহেলা করেছেন। এ কারণেই সে মারা গেছে বলে দাবি তার।
নিহতের স্ত্রী সাহিদা বেগম এবং ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ঝর্না আক্তার এ ঘটনায় অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি দাবি করেন। পরিবারের একমাত্র আয়ক্ষম ব্যক্তি নিহত হওয়ায় তিন সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে বিলোপ করছেন নিহতের স্ত্রী সাহিদা বেগম।
জেলা ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল জলিল জানান, কোনও শ্রমিক অপরাধ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু তাকে মারধর করার কোনও অধিকার কারও নেই। তিনিও অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
কোতয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ্ মো. আওলাদ হোসেন জানান, মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরসহ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণের কাজ চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার