পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্বামীর দেওয়া আগুনে পুড়ে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ ফাতেমা বেগম (২০) এর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৫ মে উপজেলার টিয়াখালী ইউনয়িনের নাচনাপাড়া গ্রামের পাষণ্ড স্বামী ছোবাহান গাজী তার স্ত্রীর পরনের কাপড়ে ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে সে মারাত্মক দগ্ধ হয়। দীর্ঘ ১০ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রবিবার মধ্য রাতে আগুনে দগ্ধ ওই গৃহবধূ মারা যায় বলে ফাতেমার চাচা হাবিব জানিয়েছেন।
পুলিশ ও ফাতেমার স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, ২৫ মে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফাতেমার শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয় তার স্বামী ছোবাহান গাজী। দগ্ধ হয়ে চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা আগুন নিভিয়ে তাকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করে। এতে তার শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে যায়। ওই রাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফাতেমাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ফাতেমার সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্ত স্বামী ছোবাহান গাজীকে গ্রেফতার করে।
ফাতেমার স্বজনরা জানান, নুন আনতে পান্তা ফুরায় দরিদ্র পরিবারের মেয়ে ফাতেমাকে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয় কিশোরী বয়সেই। উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামের ফাতেমার চরম অভাবের সংসার। দারিদ্রতার কারনে আড়াই বছরের মেয়ে রুকাইয়া লালিত পালিত হচ্ছে ফাতেমার দাদী হাসিনার কাছে। ২৪ মে বুধবার মেয়ে রুকাইয়াকে দেখতে যায় ফাতেমা। এ নিয়ে রাতে ঝগড়া হয় তার স্বামীর সাথে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জলন্ত সিগারেট ফাতেমার গালে চেপে ধরে। সিগারেটের ছ্যাকায় পুড়ে যায় ফাতেমার গাল। তখনই হুমকি দেয় পুড়িয়ে মারার।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কাকড়া, ব্যাঙ ধরে জীবিকা চালাতো নেশাগ্রস্ত ছোবাহান।
ফাতেমার চাচা হাবিব জানায়, পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ফাতেমার গর্ভের সন্তান আগুনে পুড়ে পেটেই মরে গেছে। আপরেশন করে বাচ্চা বের করতে হয়েছে। ফাতেমার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার বিকালেই পৌর শহরের কবরস্থানে দাফন হওয়ার কথা।
কলাপাড়া থানার ওসি জি এম শাহনেওয়া জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। সেই মামলায় ফাতেমার স্বামী ছোবাহান গাজীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/০১ জুন, ২০১৭/মাহবুব