বান্দরবানের লামায় যাত্রী সেজে মোটরসাইকেল চালককে অপহরণ ও হত্যার ঘটনার মূল আসামিদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী দেয় অভিযুক্তরা। গত ২৬মে উপজেলার সরই ইউনিয়নের হিমছড়ি এলাকার মৃত অজু মিয়ার ছেলে মো. কামাল উদ্দিন অপহরণের শিকার হয় এবং ২৭ মে শনিবার গভীর রাতে পার্শ্ববর্তী গজালিয়া ইউনিয়নের ডিসি রোড এলাকার ডা. হালিমের রাবার বাগান থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই হত্যা ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ছকিনা বেগম (২৮) বাদী হয়ে ৩০২/৩৪ পেনাল কোড ধারায় থানায় মামলা দায়ের করে।
অভিযুক্ত আসামিরা হল, শৈত মণি ত্রিপুরা (১৮), পিতা- যুদ্ধারাম ত্রিপুরা, টংগঝিরি পাড়া, সরই, লামা, বান্দরবান, মাইকেল ত্রিপুরা (১৮) পিতা- এনজয় ত্রিপুরা, লংগু উত্তম ত্রিপুরা পাড়া, বাইশারী, নাইক্ষ্যংছড়ি ও মাংচ অং মুরুং (১৮) পিতা- মেনঙি মুরুং, ঝাড়–সরি, ৯নং ওয়ার্ড, বিলাইছড়ি রাঙ্গামাটি। আসামী শৈতমণি ত্রিপুরা ৭ম শ্রেণী, মাইকেল ত্রিপুরা ও মাংচ অং মুরুং সরই উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র।
মামলার তদন্তকারী অফিসার লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন বলেন, নিহতের হারানো মোবাইল ফোনটির সূত্র ধরে আমরা তদন্ত শুরু করি। ধীরে ধীরে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ হাতে এলে ৮ জুলাই শৈতমনি ত্রিপুরা ও মাইকেল ত্রিপুরা এবং ৯ জুলাই মাংচ অং মুরুং কে সরই বাজার এলাকা থেকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দোষ স্বীকার করে নেয় এবং ১০ জুলাই সোমবার রাতে লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিজ্ঞ বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী দেয়। অভিযুক্তরা বলে, গত ২৬ মে শুক্রবার রাতে সরই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী গজালিয়া বাজার এলাকার গাইন্ধা পাড়ায় পাহাড়ি মেলা বসে। তাদের কাছে শুধুমাত্র এক শত টাকা ছিল। মেলায় যাওয়ার জন্য কোন টাকা ছিল না। তখন পরিকল্পনা করে সরই কেয়াজুপাড়া পশ্চিম বাজার কামারের দোকান থেকে ১টি ছুরি ক্রয় করে। তারপরে তারা তিনজন মো. কামাল উদ্দিনের মোটরসাইকেলটি ৫শত টাকা চুক্তিতে ভাড়া করে। গজালিয়া ডিসি রোড সংলগ্ন ডা. হালিমের রাবার বাগানের সামনে এসে চালককে গাড়ি থামাতে বলে। এ সময় মোটরসাইকেল চালককে জোর করে বাগানের ভিতরে নিয়ে যায়। সেখানে তার কাছ থেকে ৭ শত টাকা ও মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। তারপরে উপর্যপুরি ছুরি দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করে। হত্যার পর নিহতের লাশ ঝোঁপঝাড়ের আড়ালে লুকিয়ে রাখে ও মোটরসাইকেলটি পাহাড়ে নিচে ফেলে দেয়।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হত্যা ঘটনাটির তদন্তের জন্য বিশেষ একটি টিম গঠন করা হয়েছিল। লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক কৃষ্ণ কুমার দাশ, খালেদ মোশারফ ও খাইরুল হাসানকে মামলার তদন্ত অফিসার গিয়াস উদ্দিনকে সহায়তা করতে বলা হয়। আসামিরা লামা থানা হেফাজতে রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার