ফেনীতে শিশু গৃহকর্মী আমেনা আক্তারকে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগে আফরোজা বেগম নামের এক গৃহকর্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের ধলিয়া গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। এদিকে মেয়েটির যাবতীয় চিকিৎসার দায়ভার গ্রহণ করেছেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী।
পুলিশ জানায়, সোমবার সকাল থেকে পুলিশের একাধিক টিম আফরোজা বেগমকে আটক করতে ফেনী জেলার বিভিন্ন স্থানে ও ঢাকায় তার মেয়ে লাভলীর বাসায় অভিযান চালায়। ঢাকায় আফরোজার মেয়ে লাভলীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নে অভিযান চালায়। মঙ্গলবার ভোরে আফরোজা বেগম ধলিয়া বাজার হয়ে অন্যত্র পালিয়ে যচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এর আগে রবিবার রাতে শিশু আমেনার ফুফু ফুল জাহান বেগম টুনি বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় আফরোজাকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে।
১০ বছরের দগ্ধ শিশু আমেনা রবিবার দুপুর থেকে ফেনী জেলা সদর হাসপতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গৃহকর্তীর নিষ্ঠুর নির্যাতনে ঝলসে গেছে শিশুটির পিঠ থেকে নিম্মাঙ্গ। আগুনে শরীরের চামড়া পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ক্ষত স্থানে পচন ধরেছে।
ফেনীর পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গির আলম সরকার জানান, গত বছরের মাঝামাঝিতে শিশু আমেনা আক্তারের ফুফু ফুল জাহান বেগম টুনি তার ভাতিজি আমেনাকে কাজ করার জন্য ফেনী শহরের একাডেমির এলাকার নুরিয়া মসজিদের পেছনে আফরোজা ম্যানসনে দিয়েছিলো। এর কিছুদিন পর গৃহকর্তী আফরোজা শিশু আমেনাকে ঢাকায় তার মেয়ে লাভলীর বাসায় পাঠিয়ে দেয়। ওই বাসার গৃহকর্তী লাভলী নির্মম নির্যাতন চালায় শিশু আমেনার উপর। অমানুষিক কাজ ও শারীরিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে শিশুটির শরীরের পিছনের অংশে চুলার আগুন দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে অসুস্থ্য আমেনাকে গৃহকর্তী লাভলী তার মা আফরোজার ফেনী বাসায় পাঠিয়ে দেয়। কিছুদিন ওই বাসায় থাকার পর আফরোজা শিশু আমেনাকে রাতের অন্ধকারে ঘর থেকে বের করে দেয়।
বিডি প্রতিদিন/১১ জুলাই ২০১৭/হিমেল