ভোগান্তির আরেক নাম বঙ্গবাজার। কাদামাটি মেখেই প্রতি বর্ষাকাল পার করতে হয় এ বাজারসহ আশপাশ এলাকার মানুষের। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ী ইউনিয়নের কতুবপুর গ্রামের এ বাজারটি একটি প্রসিদ্ধ বাজার। কিন্তু এই বাজারের উভয়পাশ দিয়েই কাদামাটিতে সড়কটি এখন ধানচাষের উপযোগী।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নেত্রকোনার প্রত্যন্ত এলাকা কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামটি এখন দেশজুড়ে পরিচিত। কিন্তু মাত্র তিন কিলোমিটার সড়কের জন্য আজও রয়েছে অবহেলিত। নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের পৈত্রিক ভিটা এই কুতুবপুর গ্রামটিতেই। এমন অজোপাড়া গাঁয়ে শিক্ষা বিস্তারে তিনি গড়ে তুলেছিলেন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যাতে করে এ অঞ্চলের অবহেলিত মানুষদের সন্তানেরা পড়াশুনা করতে পারে।
কিন্তু প্রতি বর্ষাকালে বঙ্গবাজার সড়কের এমন বেহাল দশা হয়, যার দরুণ শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে স্কুলে যেতে পারে না। বৃষ্টির দিনে কাঁদামাটি মেখেই তাদের স্কুলে যেতে হয়। পরীক্ষায় সঠিক সময়ে সুস্থভাবে অংশগ্রহণও করতে পারে না। প্রতি বছর ১৯ জুলাই হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীতে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ গ্রামে যাওয়ার মূল ফটক এই বঙ্গবাজার। কোন পর্যটক বা হুমায়ূন ভক্ত বিনা কষ্টে এ গ্রামে যেতে পারেন না। এ ছাড়াও বাজারটিতে আড়াই শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট রয়েছে। অথচ রোয়াইল বাড়ি থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার সড়কের জন্য ঘুরে পার্শ্ববর্তী জেলা ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলা আঠারবাড়ি নান্দাইল হয়ে যাতায়াত করতে হয় এই বাজার এবং গ্রামগুলোর মানুষদের। এতে করে তিনগুণ টাকাও গুণতে হয় চলাচলকারীদের। বর্ষাকালে নেত্রকোনা জেলা শহর বা কেন্দুয়া থেকেও যাওয়ার কোন সুযোগ না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় সকলের। বঙ্গবাজার এলাকার আশপাশসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় ১৭ থেকে ১৮ হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত এই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন পথচারীরা।
বঙ্গবাজার এলাকার রশিদ মিয়া, শরীফ উদ্দিন বাচ্চু মিয়াসহ বিদ্যালয়গামী শিক্ষক শিক্ষার্থীরাও জানান, প্রতিবছর বর্ষাকালটা এভাবে কাটাতে হয়। এখানকার জনপ্রতিনধিরা তা গায়েই মাখছেন না। ভোট নেয়ার সময় হলে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভুলিয়ে ভালিয়ে ভোট নেন। কত জনপ্রতিনিধি যাওয়া আসা করছে কিন্তু এ এলাকার মানুষের ভাগ্যের উন্নতি ঘটছে না। স্বনামধন্য লেখকের বাড়িতেও মানুষ আসা যাওয়া কমে গেছে। অটোরিকশা, মোটর সাইকেলগুলো বিকল হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বাজরে কেউ মালামাল আনলে তার খরচ ধরে তিনগুণ।
রোয়াইল বাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান এস এম ইকবাল রুমী জনগুরত্বপূর্ণ এই সড়কে দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ৩ কিলোমিটারের অর্ধেক সড়কের কাজ শুরু হয়েছে, পুরো সড়কও দ্রুতই হবে বলে আশা করছেন।
বিডি-প্রতিদিন/১৭ জুলাই, ২০১৭/মাহবুব