সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নে কয়েকটি (টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও কর্মসৃজন) প্রকল্পে বরাদ্ধের পরিমাণ অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয় মানুষ। নামমাত্র কাজ করে কিছু জনপ্রতিনিধি বরাদ্ধের সিংহভাগ টাকা আত্মসাত করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা। অনিয়মের বিরুদ্ধে এলাকার অনেকেই ইউএনও ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ২৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে (টিআর, কাবিখা, কাবিটা, কর্মসৃজন প্রকল্প) অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদে ৩২ লক্ষ ৬৪ হাজার ৮শত ২০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
সোমবার সরেজমিনে অলংকারী ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, ২৪টি প্রকল্পের মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্পে নামমাত্র কাজ করানো হয়েছে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় ১ম পর্যায়ের ‘২ লাখ ৮ হাজার টাকা বরাদ্ধের বড়খুরমা আবদুল মতলিবের বাড়ি থেকে বড়খুরমা উত্তর মসজিদ হয়ে কবিরের বাড়ির ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা মেরামত’, ‘২ লাখ ৮ হাজার টাকা বরাদ্দের আলমনগর আবুল হোসেনের বাড়ি থেকে মোল্লাবাড়ী হয়ে মুনশীবাজার পর্যন্ত রাস্তা মেরামত’, ২য় পর্যায়ের ‘২ লাখ ৮ হাজার টাকা বরাদ্ধের রামপুর সিদ্দেক আলীর বাড়ির পাশের ব্রিজ থেকে নিতাইর বাড়ির খাল পর্যন্ত রাস্তা মেরামত’ ও গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় ২য় পর্যায়ের ‘৫৭ হাজার ৫৪৮ টাকা বরাদ্ধের পেশকারগাঁও জামে মসজিদ হতে জাকির হোসেনের বাড়ি হয়ে মকবুলের বাড়ির পাকা রাস্তা পর্যন্ত রাস্তা মেরামত’।
এসব প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের জুনে শেষ করার কথা থাকলেও তা পুরোপুরি শেষ করা হয়নি। তবে, বরাদ্ধের টাকা ঠিকমতই উত্তোলন করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যরা। ৩নং ওয়ার্ডের ‘বড়খুরমা আবদুল মতলবের বাড়ি থেকে বড়খুরমা উত্তর মসজিদ হয়ে কবিরের বাড়ির ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা পুরোটা মেরামত করা হয়নি’ এমনটাই এ প্রতিবেদকে জানান স্থানীয়রা।
তারা বলেন, এ রাস্তার কিছু অংশে আনুমানিক ৩০/৪০ হাজার টাকার মাটি ফেলা হয়েছে। তবে, এ অভিযোগ প্রসঙ্গে ওয়ার্ড সদস্য সাইদুর রহমান’র বক্তব্য জানতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
৫নং ওয়ার্ডের ‘আলমনগর আবুল হোসেন বাড়ি থেকে মোল্লাবাড়ী হয়ে মুনশীবাজার পর্যন্ত রাস্তা’ প্রবেশমুখে গিয়ে দেখা গেছে রাস্তার একপাশে কিছু বালু ফেলে রাখা হয়েছে। স্থানীয়রা জানালেন, এই রাস্তায় তেমন কোনো কাজই হয়নি। তবে ওয়ার্ড সদস্য ফজলু মিয়া বলেন, নদী থেকে মাটি এনে এই রাস্তার কাজ শেষ করেছি।
একইভাবে ১নং ওয়ার্ডের ‘রামপুর সিদ্দিক আলীর বাড়ির পাশের ব্রিজ থেকে নিতাইর বাড়ীর খাল পর্যন্ত রাস্তা’ এবং ৪নং ওয়ার্ডের ‘পেশকারগাঁও জামে মসজিদ থেকে জাকির হোসেন বাড়ি হয়ে মকবুলের বাড়ির পাকা রাস্তা পর্যন্ত রাস্তা’তেও নামমাত্র কাজ হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। প্রকল্পের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ১নং ওয়ার্ড সদস্য সাজ্জাদ আলীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ৪নং ওয়ার্ড সদস্য আলতাব আলী বলেন, আমার প্রকল্পের রাস্তার কাজ সঠিকভাবেই করা হয়েছে।
প্রকল্প সম্পর্কে বক্তব্য নিতে অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেলের সাথে বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার জানান, এ ইউনিয়নের কিছু প্রকল্প নিয়ে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। এ কারণে সেসব প্রকল্পের বরাদ্ধের অর্থ দেয়া হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/১৮ জুলাই ২০১৭/হিমেল