চট্টগ্রামে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ক্যাডার হিসাবে পরিচিত নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় ১৯ বছর আগে দায়েরকৃত মামলায় পাঁচ বছর তিন মাস কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফিউদ্দিন আজ এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি শিবির নাসিরকে আদালতে হাজির করা হয়। তার বিরুদ্ধে নগর ও চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন থানায় খুন, গুমসহ প্রায় ৩৬টি মামলা আছে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাও হয়েছে।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পিপি রায়হাদ চৌধুরী রনি বলেন, ‘পুলিশের কাজে বাধাদান, হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় তিনটি ধারায় আসামি নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এজন্য আদালত থেকে তিন ধারায় তার মোট পাঁচ বছর তিন মাস কারাদণ্ডে রায় দেওয়া হয়েছে। সাজাগুলো একটির পর একটি কার্যকর হবে।’ তিনি বলেন, ‘রায়ে দণ্ডবিধির ১৮৬ ধারায় তিন মাস কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি দণ্ডবিধির ৩৫৩ ধারায় তিন বছরের সাজা ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ৩৩২ ধারায় অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় দুই বছরের সাজা ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।’
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ৬ এপ্রিল পুলিশ নাসিরকে গ্রেফতারে চট্টগ্রাম কলেজের শেরেবাংলা ছাত্রাবাস এলাকায় অভিযানে যায়। ছাত্রাবাসটির সামনে শিক্ষকদের আবাসনের পরিত্যক্ত ভবনের বাইরে থেকে তালা দেওয়া একটি কক্ষের ভেতর লুকিয়ে ছিল নাসির। এসময় পুলিশ দরজা ভেঙে ওই কক্ষে প্রবেশ করলে নাসির জানালা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে।
এ সময় নগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন সহকারী কমিশনার আতিকুর রহমান চৌধুরী তাকে ঝাপটে ধরে আটক করেন। তখন পুলিশকে লক্ষ্য করে ছাত্রাবাস থেকে গুলিবর্ষণ করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসীরা। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে। এ ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়।
পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালি থানায় নাসির, ইয়াকুব ও হুমায়ুন নামে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। পরে নাজিরহাটে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ইয়াকুব ও হুমায়ন মারা যায়। এ মামলায় ২০০১ সালের ১৭ নভেম্বর নাসিরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ছয় জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে আদালত। নির্ধারিত দিনে কারাগার থেকে আদালতে আসতে অসম্মতি জানায় নাসির। তাই ওই দিন আর রায় ঘোষণা করা হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার