মোংলা বন্দর চ্যানেলের অ্যাংকরেজে সাড়ে ১০ মিটার ড্রাফটের ৫০ হাজার টন ধারন ক্ষমতার ‘মাদার ভেসেল’ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করতে পারবে। এছাড়া হ্যান্ডলিংয়ের জন্য আউটার চ্যানেলে ২০২০ সাল পর্যন্ত নাব্যতা বৃদ্ধিতে ড্রেজিং করতে ৭১২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এই প্রকল্পটিসহ ৩ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বর্তমানে মোংলা বন্দরের আউটার বার এলাকায় কম গভীরতার কারণে ৮ দশমিক ৫ মিটারের অধিক ড্রাফটের জাহাজ প্রবেশ করতে পারে না। এই প্রকল্পটি অনুমোদনের ফরে মোংলা বন্দরে ভিড়তে পারবে সাড়ে ১০ দশমকি মিটার ড্রাফটের ৫০ হাজার টন ধারন ক্ষমতার বিশার আকৃতির ‘মাদার ভেসেল’। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষরে (মবক) চেয়ারম্যান কমোডর এ কে এম ফারুক হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, মোংলা বন্দর অবস্থানগত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ ভারত, নেপাল এবং ভূটানের মালামাল হ্যান্ডলিং ও পরিবহনের সহজ সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অ্যাংকরেজ এলাকায় ১০ দশমকি ৫ মিটারের উর্ধের জাহাজ ভেড়ার সুযোগ থাকলেও আউটার বার এলাকায় কম গভীরতার কারণে ৮ দশামক ৫ মিটারের অধিক ড্রাফটের জাহাজ প্রবেশে করতে পারে না। এ জন্য মোংলা বন্দর চ্যানেলের আউটার বার এলাকায় গভীর ড্রেজিং এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের (মবক) চেয়ারম্যান কমোডর এ কে এম ফারুক হাসান বলেন, এই বন্দর ভারত, নেপাল ও ভূটান থেকে মালামাল হ্যান্ডলিংয়ের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে। তবে, আউটার বারের গভীরতা কম হওয়ায় বড় জাহাজ বন্দরে ঢুকতে পারে না। তাই নাব্যতা বৃদ্ধরি প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। অনুমোদিত এই প্রকল্পের আওতায়, আউটার বার এলাকায় ১০৩ লাখ ৯৫ হাজার ঘনমিটার ড্রেজিং, হাইড্রোলকি বিশেষজ্ঞের পর্যবেক্ষণ, মডেলিং এবং চ্যানেলে পলি মাটির প্রভাবও মূল্যায়নও করা হবে। এর পাশাপাশি প্রকল্পের আওতায় একটি হাইস্পিড বোটও কেনা হবে।
ফেয়ারওয়ে বয়া থেকে ১৩১ কিলোমিটার উজানে পশুর নদীর পূর্ব তীরে মোংলা বন্দরের অবস্থান। বঙ্গোপসাগর থেকে মোংলা বন্দর চ্যানেলের প্রবেশ মুখে কম গভীরতা সম্পন্ন একটি প্রশস্ত নৌপথ রয়েছে যা আউটার বার নামে পরচিতি। স্বাভাবিক জোয়ারে সময় আউটার বারে সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ চলাচল করতে পারে। পদ্মা সড়ক ও রেল সেতু নির্মাণ, খুলনা-মোংলা রেল লাইন স্থাপন, খানজাহান আলী বিমান বন্দর নির্মাণ, মোংলা বন্দররে কাছে রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নির্মাণ এবং মোংলা বন্দর এলাকায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হলে বন্দরের ব্যবহার বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। এসব কারণে বন্দরের উপর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সরকার মোংলা বন্দররে কার্যক্রম সুষ্ঠু ও দক্ষতার সাথে পরিচালনার জন্য ১০ দশমকি ৫ মিটার ড্রাফটরে জাহাজ হ্যান্ডেলিং করতে ৭১২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/১৪ নভেম্বর ২০১৭/হিমেল