বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলমানদের শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা কামনা করে দিনাজপুরে আখেরী মোনাজাতে অংশ নেয়া লাখ লাখ মানুষের আমিন আমিন ধ্বনির মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক ইজতেমা শেষ হয়েছে। আখেরী মোনাজাতে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। জেলা শহর ও আশপাশের এলাকার পুরুষ, নারী, বৃদ্ধ, শিশুসহ সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মানুষ এ মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।
মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইলের মুরব্বি ও বাংলাদেশ তাবলীগ জামাতের আমির (জিম্মাদার) মাওলানা মো. রবিউল হক। ১২ থেকে ১২টা ১১মিনিট পর্যন্ত এ মোনাজাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলমানদের শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা কামনা করা হয়।
শনিবার সকাল থেকে দিনাজপুর বড়মাঠের ইজতেমায় সমবেত হন কয়েক লাখ মানুষ। বেলা ১০টার মধ্যে ইজতেমা মাঠ ভরে পাশের শিশু পার্ক, পুলিশ সুপার অফিসের রাস্তা ও আশপাশের ফাকা এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে ঊঠে। পরিণত হয় জনসমুদ্রে।
মোনাজাতে অংশগ্রহণকারী সাধারণ মানুষের দাবি দিনাজপুরে এতো বড় জমায়েত আর কখনো হয়নি। আখেরী মোনাজাতে ৩ লাখের অধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেছে বলে সাধারণ মুসল্লিরা দাবি করেছে।
আখেরী মোনাজাতে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম, পুলিশ সুপার মো. হামিদুল আলম, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
শনিবার ইজতেমার শেষ দিনে বাদ ফজর থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় পর্যন্ত বয়ান করেন কাকরাইলের মুরব্বি মাওলানা মো. মোশাররফ হোসেন। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা পৌনে ১২টা পর্যন্ত হেদায়েতী বয়ান পেশ করেন কাকরাইলের মুরব্বি মাওলানা আব্দুল মতিন। হেদায়েতী বক্তব্যের পর মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইলের মুরব্বি ও বাংলাদেশ তাবলীগ জামাতের আমির (জিম্মাদার) মাওলানা মো. রবিউল হক। মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে ১১ মিনিট পর শেষ করেন।
আখেরী মোনাজাতের পূর্বে বয়ান পেশ করেন মাওলানা মো. রবিউল হক। তিনি বলেন, সাহাবায়ে কেরামের যুগে তাদের কোন সামান (সরঞ্জাম) ছিল না। তাদের জ্ঞানও কম ছিল। তার পরও তারা ইমানের বলে বলিয়ান হয়ে বিশ্বের বুকে মাথা উচুঁ করে দাড়িয়েছিল। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের মুসলমানদের হাতে সব কিছু থাকার পরও আজ বিশ্বে মুসলমানরা লাঞ্চিত। এর কারণ মুসলমানরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াতী কাজ থেকে দূরে সরে গেছে। তাই মুসলমানদের সেই মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে হলে দ্বীন ইসলামের পথে ফিরে আসতে হবে। তাহলে বিশ্বে আবারো শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে।
এদিকে দিনাজপুর তাবলীগ জামাতের আমির (জিম্মাদার) আলহাজ্ব মো. লতিফুর রহমান জানান, তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ইজতেমা মাঠ থেকে প্রায় ৫০টি জামায়াত এক চিল্লা ও তিন চিল্লার জন্য বের হয়ে যায়। এসব জামাত সিরাজগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও বি.বাড়িয়া জেলায় যাবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে টঙ্গীতে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব ইজতেমায় দেশের ১৬ জেলা অংশ নিতে পারবে না। এর মধ্যে দিনাজপুর রয়েছে। তাই বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে না পারায় জেলা পর্যায়ে এই আঞ্চলিক ইজতেমার আয়োজন করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/২ ডিসেম্বর ২০১৭/হিমেল