ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চুমুরদি ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী এলাকায় মমতাজ বেগম নামের এক বিধবার জমি দখল করে নেবার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু জমি দখলই নয়, জমিতে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকশ গাছও কেটে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে অসহায় মমতাজ বেগম ও তার দুই কন্যাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। ফলে মমতাজ বেগম প্রাণভয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছেন। এ বিষয়টি নিয়ে মমতাজ বেগম বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিকার পাননি।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, চুমুরদি ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী গ্রামের কৃষক সিরাজ খান ২০০৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। সিরাজ খান মারা যাবার পর তার স্ত্রী মমতাজ বেগম তার দুই কন্যাকে নিয়ে মানবেতর ভাবে দিন যাপন করে আসছিল। স্বামীর মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি চাষাবাদ করে দু মেয়েকে নিয়ে কোন রকমে সংসার চালিয়ে আসছিল মমতাজ বেগম। দু মেয়ের বিয়ের পর মমতাজ বেগম বাড়ীতে একাই বসবাস করতো।
তবে মমতাজ বেগমের দেবর, সদ্য অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনষ্টেবল নিজাম খান দীর্ঘদিন ধরে তার ভাই সিরাজ খানের জায়গা জমি দখল করে রেখেছে। বর্তমানে সেইসব জায়গা জোরপূর্বক দখল করে চাষাবাদ করছেন। শুধু তাই নয়, সিরাজ খানের নামে দলিলকৃত জমিও নিজাম খান নিজ নামে রেকর্ড করে নিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে অসহায় বিধবা মমতাজ বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর জমির সকল দলিলপত্র ছিল নিজাম খানের কাছে। বিভিন্ন সময় জমির দলিলপত্র দিতে বললে সে নানা টালবাহানা করতো। স্থানীয় থানা পুলিশের এবং সাবেক চেয়ারম্যান মিলন খানের সহযোগীতায় নিজাম খান বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নিজাম খান আমার স্বামীর জায়গা জমি দখল করে নিয়েছে। এমনকি প্রতিনিয়ত আমাকে এমন আমার দু মেয়েকে প্রাননাশের হুমকি দিচ্ছে। তাদের হুমকির কারনে আমি এখন বাড়ী ছাড়া। সম্প্রতি, আমার বাড়ীর বেশ কিছু গাছ কেটে নিয়েছে নিজাম খান ও তার সহযোগীরা। এসব বিষয় নিয়ে আমি যাতে কারো কাছে নালিশ না করি সেজন্য আমাকে হুমকি দেয়া হয়েছে। তাদের অব্যাহত হুমকির কারনে বাড়ী ছাড়তে বাধ্য হই। বিষয়টি নিয়ে আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দাখিল করেও কোন প্রতিকার পাইনি।
এসময় তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নিজাম খান চাকুরী থেকে অবসর নিয়ে বাড়ীতে এসে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সে আমাকে এবং আমার দু মেয়েকে নানাভাবে হেনস্তা করছে। আমার দু মেয়ের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। আমি অসহায়, বয়স্ক একজন বিধবা মহিলা। নিজাম খান আমার স্বামীর সকল সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে তৎপরতা চালাচ্ছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষন করে বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাকে বাঁচান, আমার দুই এতিম মেয়েকে তার বাবার সম্পত্তি রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করুন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৃত সিরাজ খানের ভাই নিজাম খান বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। আমি স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করছি।
বিডি প্রতিদিন/২২ ডিসেম্বর ২০১৭/ওয়াসিফ