বরিশালের গৌরনদী থানার বিতর্কিত ওসি মো. মনিরুল ইসলামকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ক্লোজড (সংযুক্ত) করা হয়েছে। গৌরনদী সরকারি কলেজ ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী সাকির গোমস্তা হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ফাহিমকে গ্রেফতারের পর উৎকোচের বিনিময়ে থানা থেকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম গত শুক্রবার রাতে এক অফিস আদেশে ওসি মনিরুল ইসলামকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংযুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেন।
নিহত ছাত্রলীগ কর্মী সাকিরের মা আলেয়া বেগম ও বড় ভাই জাকির হোসেন অভিযোগ করেছিলেন, গত বছর ২২ নভেম্বর সাকিরের উপর হামলাকারী ও হত্যা মামলার ৬নম্বর আসামি ফাহিমকে ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় জনতা আটক করে গৌরনদী থানার এসআই শামসুদ্দিনের কাছে সোপর্দ করেন। এসআই শামসুদ্দিন আসিমি ফাহিমকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যান। ফাহিমকে গ্রেফতার করায় ওসি ক্ষুব্ধ হন এবং তিনি তাকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। ওসির নির্দেশের পরও এসআই শামসুদ্দিন আসামি ফাহিমকে ছেড়ে না দিয়ে ডিউটি অফিসারের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে বরিশাল চলে যান যান। ওইদিন সন্ধ্যায় মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে ফাহিমকে ছেড়ে দেন ওসি মনিরুল।
এ ঘটনায় অভিযোগ করা হলে পুলিশ সুপার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মফিজুল ইসলামকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্তে ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হয়।
পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত এবং মাদক নির্মূল সহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে ওসির অযোগ্যতা প্রমানিত হওয়ায় মনিরুল ইসলামকে গৌরনদী থানা থেকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে গৌরনদী থানায় নতুন কোন ওসি পদায়ন করা হয়নি।
উল্লেখ্য, গৌরনদীর পালরদী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহ শিক্ষকদের গালাগাল করে স্থানীয় যুবলীগ কর্মীরা। সাকির গোমস্তা এর প্রতিবাদ করলে সোহেল গোমস্তা, ইলিয়াছ খান, সুমন হাওলাদার, এমরান মীর ও ফাহিমের নেতৃত্বে যুবলীগের ১০/১২ কর্মী ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে সাকিরকে পিটিয়ে-কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। ২১ নভেম্বর গভীর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাকিরের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা আলেয়া বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন