মুক্তিযোদ্ধা হামেদ আলী। বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলার কালিনগর গ্রামে। মুক্তিযুদ্ধে ৭ নং সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেছেন তিনি। কিন্তুু পাননি কোন স্বীকৃতি। সরকারী স্বীকৃতি না পাওয়া এবং অর্থাভাবে চিকিৎসার অভাবে ২০০৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন হামেদ আলী। এদিকে দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করলেও ভালো নেই তার স্ত্রী-সন্তানরা।
বিধবা স্ত্রী ও তিন মেয়ের লেখাপড়ার ভবিষৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছেনা। দিনমজুরের কাজ করে জীবন সংগ্রামে অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছেন স্ত্রী রেনুকা।
স্বামীর মৃত্যুর পর তিন মেয়ে নিয়ে চরম বিপদে পড়েছেন তিনি। বড় মেয়ে রোখসানার গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে কাজ করে এসএসসি পাশ করে। এখন সে শক্তি ফাউন্ডেশনের মাঠ কর্মী হিসেবে চাকুরির পাশাপাশী পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে নিজ খরচে। অভাব অনটনে তাঁর মেজ মেয়ে সুরমাকে নাটোর দিঘাপতিয়া শিশু সদনে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে সে এসএসসি পাশ করেছে। এখন সে দিঘাপতিয়া এমকে কলেজে এইচএসসির ১ম বর্ষে পড়ালেখা করছে। বাড়ি থেকে প্রতিদিন যেতে খরচ ৭০ টাকা। এ টাকা দেয়ার মত সামর্থ্য নেই রেনুকার। তাই কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে মেয়েটির। ছোট মেয়ে মালা বিলদহর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী।
দু'মেয়ের পড়ালেখার সব খরচ বহন করতে হয় মুক্তিযোদ্ধা স্ত্রী রেনুকার। তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। সরকারী কোন ভাতা জোটেনি তার কপালে। স্বামী মারা যাবার বিধবা ভাতাও পাননি তিনি।
সহকর্মী মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান জানান, আমরা ভারতে ৮ জন প্রশিক্ষণে ছিলাম। এর মধ্য হামেদ আলীও ছিলো। তার সাথেই আমি যুদ্ধে অংশ নেই। সে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।
কলম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঈনুল হক চুনু বলেন, আমি তাকে চিনি, সে কার্ড পাবার যোগ্য। তার যেন কার্ড হয় সে ব্যবস্থা করবো।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল ওদুদ দুদু জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে সিংড়ায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই হয়। সে হিসেবে ৪৪ জনের চূড়ান্ত নামের তালিকাভূক্ত হয়েছে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে হামেদের নাম রয়েছে। তাদের নাম মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। আশাকরি দ্রুত তাদের নাম গেজেটভুক্ত হবে এবং এই অসহায় পরিবারগুলো ভাতাভোগীর তালিকার আওতায় আসবে।
বিডি প্রতিদিন/২৯ জুলাই ২০১৮/হিমেল