সরকার কর্তৃক বিট-খাটালের অজুহাতে জেলার মাসুদপুর সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে গরু আসা বন্ধ হয়নি। মঙ্গলবার রাতে গরু আনার জন্য মাসুদপুর সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের সময় ৩ বাংলাদেশি রাখাল ভারতের শোভাপুর বিওপি’র বিএসএফের হাতে ধরা পড়েছে বলে সীমান্তের একটি সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র মতে, ভারতের দিকে রাতে পাচারের জন্য প্রায় ৩ হাজার গরু জমা করা হয়েছিল। আর ওই খবর পেয়ে শোভাপুর বিওপি’র বিএসএফ ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩ জন বাংলাদেশি রাখালকে আটক করে। এ ব্যাপারে ৫৩ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল সাজ্জাদ সারোয়ার জানান, এ বিষয়ে ভারতের বিএসএফের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি স্বীকার করেনি। তবে স্থানীয়দের কাছে একজন নিখোঁজ থাকার কথা শোনা গেছে। কিন্তু তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানা গেছে, বিজিবি’র নির্দেশ অমান্য করে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মাসুদপুর বিট-খাটালের মালিক রুবেলের নেতৃত্বে গড়ে উঠা একটি সিন্ডিকেট ভারত থেকে চোরাইপথে গরু আনতে বাংলাদেশি রাখালদের ভারত পাঠাচ্ছে। অথচ বিজিবি’র কঠোর নির্দেশনা রয়েছে যে কেউ যেন অবৈধপথে চোরাই গরু আনতে ভারতে না যায়। কিন্তু বিজিবি’র নির্দেশনা মানছে না মাসুদপুর বিট-খাটালের মালিক রুবেলের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে একটি চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী সিন্ডিকেট।
অভিযোগ রয়েছে, ওই চক্রের অন্যতম সদস্য বাশেদ, কাইয়ুম, আবআস, শফি ও আলিমসহ প্রায় ১৫ জন ভারত থেকে চোরাপতে আসা বড় গরু জোড়া প্রতি ১২ হাজার টাকা এবং ছোট গরু জোড়াপ্রতি ৯ হাজার টাকা করে আদায় করছে গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। এছাড়াও গরু ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেছেন, ওই চক্রের সদস্যরা নদীতে ভাসিয়ে নিয়ে আসা ব্যবসায়ীদের গরু প্রায় চুরি ও ছিনতাই করে কখনও তালপট্টি আবার কখনওবা ৬ নম্বর বাঁধ এলাকায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে। এমন ঘটনা প্রায় প্রতিদিনই ঘটায় গরু ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাসুদপুর বিটের একজন গরু ব্যবসায়ী অভিযোগ করে জানান, বিটে গরু রাখার জন্য ১২০ টাকা এবং কাষ্টমসের করিডোর রশিদের জন্য ৫৩০ টাকা নেয়ার কথা থাকলেও তাদের কাছ থেকে বড় গরু জোড়া প্রতি ১২ হাজার টাকা এবং ছোট গরু জোড়াপ্রতি ৯ হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। এই চাঁদা আদায় প্রসঙ্গে তারা বলছে, আদায়কৃত অর্থের ভেতর থেকে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে ৭ হাজার টাকা দিতে হয়।
একটি সূত্র জানায়, শিবগঞ্জের সিন্ডিকেট প্রধান রুবেলের নামে গত ১৮ আগষ্ট থেকে মাসুদপুর বিট-খাটালের অনুমোদনের পর থেকে আজ পর্যন্ত অবৈধপথে প্রায় ১০ হাজার গরু আনা হয়েছে। সর্বশেষ গত সোমবার ও মঙ্গলবার প্রায় ১ হাজার গরু এসেছে। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারত থেকে চোরাই গরুর সাথে ফেন্সিডিলসহ মাদকদ্রব্য আসার ফলে বিট-খাটাল এলাকায় মাদকাসক্তদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়াসহ অপরিচিত লোকজনের আনাগোনাও বেড়েছে। এব্যাপারে মাসুদপুর বিট-খাটালের মালিক রুবেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে পরে কথা বলছি জানিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন।
বিডি প্রতিদিন/৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮/হিমেল