মেঘালয়ের পাদদেশে গারো পাহাড়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি দুর্গাপুর উপজেলা। এখানে গারো, হাজং, হিন্দু, মুসলিমসহ বেশ কয়েকটি সম্প্রদায়ের একত্রে বসবাস। কিন্তু সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে এই উপজেলার জনপদ। ১৩.৩২ বর্গ কি.মি. জায়গায় গঠিত দুর্গাপুর পৌরসভা দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত হলেও নগরবাসীর জীবনযাত্রায় সেই প্রভাব পড়েনি।
এলাকার ভুক্তভোগীরা জানান, পৌর শহরের বেশির ভাগ স্থান জুড়েই রয়েছে স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, মসজিদ-মন্দির, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি স্থাপনা। আর এসকল প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতকারীদের প্রতিদিনই সড়কে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা আর পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় প্রতিনিয়তই দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। অল্প বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়ে পুরোপুরি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরে পৌর শহরের প্রধান প্রধান পথঘাট।
গত কয়েক দিনে ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে সারাদেশে নিম্নচাপের ফলে সৃষ্ট বৃষ্টিপাতে শহরের তেরী বাজার, কালী বাড়ী মোড়, উকিলপাড়া সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূণ সড়ক পুরোপুরি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ নগরবাসী। পুরো রাস্তা জুড়ে কাঁদায় একাকার হয়ে যাওয়ায় রাস্তা পারাপারেরও কোন সুযোগ নাই পথচারীদের।
এর উপর বালু ব্যবসায়ীরা ভারি যানবাহন ও ভেজা বালি পরিবহন করে প্রতিনিয়তই সড়কগুলোতে কাদার সৃষ্টি করেছে। তার উপরে আবহাওয়াজনিত কারণে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে চরমে। এতে করে প্রতিদিনই ঘটছে কোন না কোন দুর্ঘটনা যা দেখেও না দেখার ভান করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া শহরের বাগিচাপাড়া সহ বেশ কিছু এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বাড়িতে পানি উঠে যায়। অনেককে নিজ উদ্যোগ্যে পানি সেঁচে বাসা বাড়িতে জীবনযাপন করতে দেখা গেছে। এরকম দুর্ভোগের মুখে কতদিন থাকা যায় বলে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঐ মহলায় বসবাসরত ভোক্তভোগীরা। কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ঐ এলাকার মানুষ রোদ উঠলে জমাট পানিতে ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে বাসা বাড়িতে অবস্থান করতে পারেন না।
উকিলপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা সমশের আলীসহ কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, দিনের পর দিন ট্যাক্স বাড়ছে কিন্ত সেরকম সেবা কই? আর বৃষ্টির পানির সাথে প্রতিদিন যুদ্ধ করে রুটিরুজির ব্যবস্থা করতে হয়। আমার বাসার পাশ দিয়ে প্রতিদিন কত মানুষ জমে থাকা পানিতে পা পিছলে আঘাত পেয়েছেন, তা গুনে বলা যাবে না।
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র আলহাজ্ব আব্দুস ছালাম বলেন, ট্রাকগুলো ভেজা বালি পরিবহনের কারণে সড়কে কাদার সৃষ্টি হয়েছে। যদি ভেজা বালির পরিবহন বন্ধ করা যায় তাহলে এই সমস্যা থাকবে না বলে তিনি জানান।
বিডি প্রতিদিন/১৩ অক্টোবর ২০১৮/হিমেল