১১ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির প্রথমদিন মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি নৌবন্দর অচল হয়ে পড়েছে। কর্মবিরতির কারণে সোমবার মধ্যরাত হতে জাহাজ থেকে সার, জ্বালানী তেল ও খনিজ কয়লাসহ অন্যান্য পণ্য লোড-আনলোড বন্ধ রয়েছে। পণ্যবাহী জাহাজগুলো বন্দরের দক্ষিণ পাশের বড়াল নদীর মাঝ চরে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। জাহাজ শ্রমিক ও বন্দর শ্রমিকরা দিনভর বসে বসে অলস সময় পাড় করছেন।
এদিকে, জ্বালানি তেল ও সার সরবরাহ বন্ধ থাকায় ইতোমধ্যে উত্তরাঞ্চলের বাজারে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। অনেক এলাকায় সার ও জ্বালানি তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা জ্বালানী তেলের লিটার ও সারের কেজি প্রতি ২/১ টাকা করে বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে বন্দরের ৫ শতাধিক লোড-আনলোড কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরাও কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।
বাঘাবাড়ি ওয়েল ডিপোর ইনচার্জ ও যমুনা ওয়েল ডিপোর ম্যানেজার কে.এম. জাহিদ সরোয়ার বলেন, আপাতত বাঘাবাড়িতে জ্বালানী তেলের কোনো সংকট নেই। তবে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকলে কিছু কিছু জ্বালানী তেলের ঘাটতি সৃষ্টি হতে পারে।
বাঘাবাড়ি বাফার গুদামের ইনচার্জ সোলায়মান হোসেন বলেন, আপাতত বাঘাবাড়িতে সারের কোনো সংকট নেই।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শাহ আলম ভূইঁয়া বলেন, বাঘাবাড়িসহ সারাদেশের নৌবন্দনের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে একটি স্বার্থন্বেষী মহল আমাদের এ কর্মসূচি বানচালের জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি নৌবন্দর শাখার সভাপতি দাউদুল ইসলাম বলেন, কর্মবিরতির প্রথম দিন মঙ্গলবার এ দুই বন্দরের সকল প্রকার নৌযান চলাচল ও মাল লোড আনলোড বন্ধ রয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলবে।
নৌযানশ্রমিকদের ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- বাল্কহেডসহ সকল নৌযানে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ২০১৬ সালের ঘোষিত বেতন স্কেলের পূর্ণ বাস্তবায়ন, ভারতগামী নৌযান শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাশ প্রদান ও হয়রানি বন্ধ, খাদ্যভাতা প্রদান, কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত নৌযান শ্রমিকদের ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান, নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিসবুক প্রদান, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করণ, নদীর সঠিক নব্য রক্ষা, মার্কা, বয়া ও বাতি প্রয়োজন অনুযায়ী স্থাপনসহ ১১ দফা চুক্তির দাবি বাস্তবায়ন।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম