২৫ এপ্রিল, ২০১৯ ২১:৫২

যৌন নিপীড়ন ও বাল্যবিবাহ বন্ধে ধামইরহাটে শোভাযাত্রা

নওগাঁ প্রতিনিধি

যৌন নিপীড়ন ও বাল্যবিবাহ বন্ধে ধামইরহাটে শোভাযাত্রা

নওগাঁর ধামইরহাটে বৃহস্পতিবার সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে যৌন নিপীড়ন ও বাল্যবিবাহ বিরোধী শোভাযাত্রা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘দেখাবো আলোর পথ’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আয়োজনে এবং ধামইরহাট উপজেলা পরিষদের সহযোগিতায় এসব কর্মসূচি পালিত হয়। 

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতন বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রত্যেকটি পরিবার এই সমস্যার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। সমাজের এই দুরবস্থার কারণে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারছে না। সমাজের এই গ্লানি দূর করতে দেশের প্রতিটি সুনাগরিককে যার যার জায়গা থেকে ভূমিকা পালন করতে হবে। বাল্যবিবাহ, যৌন নিপীড়ন ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। 
‘যৌন নিপীড়ন বন্ধ করি, কলঙ্কমুক্ত জাতি গড়ি’ ও ‘বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে যাই, সুস্থধারার সমাজ চাই’ স্লোগানে সকাল ৮টায় ধামইরহাট এমএম ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে গণসচেতনতামূলক শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রায় ধামইরহাট উপজেলা সদরেরর তিনটি বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক বালিকা শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। 

শোভাযাত্রাটি উপজেলা সদরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে নারী নির্যাতন ও বাল্যবিবাহবিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গণপতি রায়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নওগাঁর পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন। 

বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক আবুল কালাম মোহাম্মদ আজাদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ধামইরহাট এমএম ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম, ধামইরহাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাবিনা এক্কা ও সোহেল রানা, ধামইরহাট চকময়রাম মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খেলাল-ই রাব্বানী। 

সমাবেশের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, দেখাবো আলোর পথ সংগঠনের সভাপতি মেহেদী হাসান। 

আবুল কালাম মোহাম্মদ আজাদ বলেন, বাল্যবিবাহ, যৌন নিপীড়ন ও নারী নির্যাতন আজকে সমাজের একটি ব্যাধি হিসেবে দেখা দিয়েছে। প্রত্যেকটি পরিবার কমবেশি এসব সমস্যা রয়েছে। বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের বিবেককে জাগ্রত করতে কাজ করে যাচ্ছে ‘দেখাবো আলোর পথ’ নামের এই সংগঠনের কয়েকজন তরুণ। সুবিশাল এই আয়োজন করে সংগঠনটি শুধু প্রত্যন্ত এই উপজেলার মানুষের নয়, বাংলাদেশেরই চোখ খুলে দিয়েছে। এই তরুণদের মতো সমাজের প্রত্যেকটি মানুষ যার যার জায়গা থেকে সোচ্চার ভূমিকা রাখলে দেশটা বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতনমুক্ত হয়ে যাবে। তখন আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই বাসযোগ্য ও স্বপ্নময় হয়ে উঠবে। 

পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, দেখাবো আলোর পথের কয়েকজন তরুণ যে কাজ করে যাচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এই ধরণের গণসচেতনামূলক কার্যক্রম সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশটা সত্যিকার অর্থেই দেশে কোনো বাল্যবিবাহ, যৌন নিপীড়ন ও নারী নির্যাতন থাকবে না।

২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেখাবো আলোর পথ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি মাদক, বাল্যবিবাহ, যৌন নিপীড়ন ও নারী নির্যাতন রোধে গণ সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর