২৪ জুন, ২০১৯ ১৭:০৬

গ্রাম্য ডাক্তারের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি চেষ্টার অভিযোগ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

গ্রাম্য ডাক্তারের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি চেষ্টার অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

ঝিনাইদহের মহেশপুরে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে পঞ্চম শ্রেণীর দুই ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে গ্রাম্য ডাক্তার ও এক ভাজা বিক্রেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই ভাজা বিক্রেতাকে গ্রাম্য সালিশের নামে মারধর ও জরিমানা করা হলেও অজ্ঞাত কারণে ছাড়া পেয়ে গেছেন ডাক্তার। 

জানা গেছে, মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়নের জোঁকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর দু’ছাত্রীকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে শনিবার সকালে কালহুদা গ্রামের আয়নাল মন্ডলের ছেলে গফুর ডাক্তার (৪৫) ও একই গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে ভাজা বিক্রেতা আব্দুল লতিফ (৩২)  স্কুলের পাশে একটি মেহগুনি বাগানে নিয়ে গিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে।   

এ ঘটনায় গত ১৯শে জুন স্থানীয় মাতব্বর আইনাল হকের ছেলে লাট, খাইরুল ইসলামের ছেলে অমেদুল, আব্দুল খালেকের ছেলে সবুজ রাত ১১টার দিকে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে মাঠে নিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ আব্দুল লতিফের।  

এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত গ্রাম্য ডাক্তার গফুরকে গত ২২শে জুন শনিবার সন্ধ্যায় তার বাড়ি থেকে আটক করে মহেশপুর থানার এসআই শাহিন। পরে ভুক্তভোগীদের নিয়ে থানায় অভিযোগ করানো হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে গ্রাম্য ডাক্তার থানা থেকে মুক্তি পান রাত ১টার দিকে। 

ভুক্তভোগী এক ছাত্রী জানান, তারা দুই বান্ধবী স্কুলে যাওয়ার পথে মেহগুনি বাগানে বসে থাকা লতিফ তাদেরকে ডাকেন। তারা দু-জনে সেখানে গেলে তাদেরকে বসিয়ে লেখাপড়ার খোঁজ খবর নেন। এক পর্যায়ে তাদের দু-জনকে দুটো কলা খেতে দেন। কলা হাতে নিয়ে নাড়াচারা করতেই কলায় একটি ছিদ্র তাদের চোখে পড়ে। কলার ভিতর ট্যাবলেট দেখে কলা খেতে অস্বীকার করে চলে আসতে চাইলে বিভিন্নভাবে টাকার পলোভন দেখিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন লতিফ ও গফুর। পরে তারা দৌড়ে স্কুলে চলে যায়। 
  
লতিফ বলেন, আমি আমার জমিতে সেচ দিচ্ছিলাম, ডাক্তার গফুর তাদেরকে আমাকে ডেকে আনতে বলে। আমি ওদের ডেকে নিয়ে এসে আমার জমিতে পানি হয়েছে কিনা সেটা দেখতে চলে যাই। ফিরে এসে দেখি গফুর তাদেরকে কলা খেতে দিয়ে গায়ে হাত বুলিয়ে কু-প্রস্তাব দিচ্ছে। তা দেখে আমি মেয়ে দুটোকে স্কুলে চলে যেতে বলি। পরে তারা স্কুলে চলে যায়। 

তিনি আরও বলেন বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পরে গফুর ডাক্তারের  ছোট ভাই গত ১৯শে জুন স্থানীয় মাতব্বর আইনাল হকের ছেলে লাট, খাইরুল ইসলামের ছেলে অমেদুল, আব্দুল খালেকের ছেলে সবুজ রাত ১১টার দিকে বাড়ি থেকে আমাকে ডেকে মাঠে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং এ কাজ আমি করেছি, গফুর ডাক্তার করেনি- এই মর্মে স্বীকারোক্তি আদায় করে। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত গফুর ডাক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি মহল আমাকে ফাঁসাতে চক্রান্ত করছে। এমন কাজের সাথে আমি জড়িত নই।

ছাত্রীর অভিভাবকরা জানান, এমন ঘটনার কথা লোকমুখে শুনতে পেয়ে মেয়েদের কাছে চানতে চাইলে তারা ঘটনার সত্যাতা স্বীকার করেন। পরে শনিবার থানায় মামলা করতে গেলে স্থানীয়ভাবে  মিমাংশা করার কথা বলে মেম্বার সুজন তাদেরকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান।

মহেশপুর থানার অফিসাস ইনচার্জ (ওসি) রাশেদুল আলম জানান, গ্রাম্য ডাক্তারের বিরুদ্ধে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। তাই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর