৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ২১:২০

পাবনায় আওয়ামী লীগ নেতার অবৈধ নৌবন্দর উচ্ছেদ

পাবনা প্রতিনিধি:

পাবনায় আওয়ামী লীগ নেতার অবৈধ নৌবন্দর উচ্ছেদ

পাবনার বেড়ায় পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির অবৈধ নৌবন্দর উচ্ছেদ করেছে বিআইডব্লিউটিএ। সোমবার সকাল থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত এ অভিযানে বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয় হুরাসাগর নদের পাড়ে বৃশালিখা বে-সরকারী রাজ ঘাট নামের অবৈধ নৌ বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনা। এ সময় পন্য খালাস করতে আসা নয়টি জাহাজ ও নয়জন শ্রমিককেও আটক করা হয়। 

নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হাবিবুর রহমান নের্তৃত্বে অভিযানে বিপুল সংখ্যক র‌্যব পুলিশসহ ও বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।

বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ জানান, কোন ধরনের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে, বিআইডব্লিউটিএর অনুমোদন ছাড়াই অবৈধ বন্দর তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে তা পরিচালনা করে আসছিলেন বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র আব্দুল বাতেন। এতে বিপুল অংকের রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছিল সরকার। কয়েক দফা নোটিশ দেবার পরেও তা বন্ধ না করায় অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করল বিআইডব্লিউটিএ।

উপ-সচিব হাবিবুর রহমান জানান, গত প্রায় এক দশকেরও বেশী সময় ধরে বেড়া পৌর এলাকার বৃশালিখায় হুরাসাগর নদে এ ছোট পরিসরের এ বন্দরে অবৈধভাবে পণ্যবাহী জাহাজ থেকে মালামাল খালাস করা হচ্ছিল। বৃশালিখা ঘাটের মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরেই রাষ্ট্রায়ত্ত বাঘাবাড়ী নৌ বন্দর। দূর দূরান্ত থেকে আসা মালবাহী নৌযানগুলো বৃশালিখার অবৈধ ঘাটে নোঙর করায় কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এ কারণেই অবৈধ এই বন্দরটি উচ্ছেদ করে দেয়া হল। অভিযানে বন্দরে ওজন যন্ত্র, অফিস কক্ষ, আটটি ঘাট ও চারটি সংযোগ সড়কও ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।

হাবিবুর রহমান আরো জানান, অভিযান চলাকালে অবৈধ বন্দরে পন্য খালাস করতে আসা নয়টি জাহাজ আটক করে নয়জনকে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড প্রদান করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় নৌযান শ্রমিক ও মালিকদের অবৈধ ঘাটটি ব্যবহার না করে রাষ্ট্রায়ত্ত নগরবাড়ী ও বাঘাবাড়ি ঘাট ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়।
অভিযান চলাকালে স্থানীয় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বাধা দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তারা বিক্ষোভ করেন। স্থা

নীয় ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম বলেন, বৃশালিখা ঘাটে প্রতিদিন কমপক্ষে আট থেকে দশ কোটি টাকার পণ্য ওঠা নামা হয়। এতে কয়েক হাজার মানুষের জীবন জীবিকা জড়িত। হঠাৎ করেই এমন উচ্ছেদে তারা কর্মহীন হয়ে পড়বেন। অন্তত কিছুদিন সময় দেয়া উচিত ছিল।

দুপুরে অভিযান পরিদর্শনের আসেন বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমোডোর মাহবুবুল আলম। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রচলিত আইনানুসারে কেবল মাত্র বিআইডব্লিউটিএ দেশে নৌবন্দর পরিচালনায় বৈধ কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সরকার খেয়া পারাপারের জন্য ঘাট ইজারা দিতে পারে, কিন্তু পণ্যবাহী জাহাজ নোঙর করে বৃশালিখা ঘাটে যেভাবে বন্দরের কার্যক্রম চালানো হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অবৈধ। বৃশালিখা ঘাটের কারণে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে হারিয়েছে। কোন ভাবেই আর এই অবৈধ কার্যক্রম চলতে দেয়া হবে না।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর