আগাম জাতের আলু চাষ করে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। এবার আলু চাষে খরচ বেশী, শীতের কারণে জেলার বাইরের ব্যবসায়ীরা আলু কিনতে আসছে না এবং এখনো পুরাতন আলুর সরবরাহ বাজারে থাকায় আলুর দাম পাচ্ছেন বলে জানান তারা। তাই লাভের আশায় আগাম আলু চাষ করে লোকসানের আশঙ্কা করছেন আলু চাষিরা।
গত বছরেও দিনাজপুরের কৃষকরা আগাম জাতের আলু চাষ করে লাভবান হন। কিন্তু ওইসব কারণে এ বছর নতুন আলুর দাম কম থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
এবার বাজারে পুরোনো আলু থাকায় নতুন আলু প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৩-২৬ টাকা প্রতি কেজি।
দিনাজপুরের আগাম আলু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যবসায়ীরা নিয়ে যায়। কিন্তু এবার শীতের এবং বিভিন্ন জেলায় আগাম জাতের আলুর চাষও হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরাও আসছেন না বলে জানান অনেক ব্যবসায়ী।
সপ্তাহ খানেক ধরে প্রচণ্ড শীত থাকলেও গরম ছিল শীতের সবজির বাজার। কিন্তু সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পাতা পিয়াজ, বেগুন, মুলা, কাচামরিচ চড়া দামে হওয়ায় মুখ কালো করেই বাড়ি ফিরতে হয়েছে ক্রেতাদের। তবে শীত যেমন বাড়তে শুরু করেছে, তেমনি কমতে শুরু করেছে আলুসহ বিভিন্ন শীতের সবজির দামও।
আগাম জাতের আলু চাষি চিরিরবন্দরের ফজলুর রহমান মাস্টার জানান, নিজের তিন বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করে পেয়েছি প্রতি বিঘা জমিতে ৮০ কেজির বস্তায় ৪০ থেকে ৫০ বস্তা আলু। কিন্তু বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে প্রতি বস্তা আলুর দাম ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা। অথচ আমার তিন বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকারও বেশি। কিন্তু আগাম আলু তুলে ওই টাকা তুলতে পারছি না।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ তৌহিদুল ইকবাল সাংবাদিকদের জানান, কৃষকেরা প্রথমদিকে প্রতি কেজি আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করতে পেরেছেন। এখন দেশের বিভিন্ন এলাকায় আগাম আলু ওঠায় বাজারে সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া বাজারে পুরোনো আলুও রয়েছে।
জেলায় এবার আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪১ হাজার ৭৯০ হেক্টর। এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ৪০ হাজার ৬৪ হেক্টর জমির আলু।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম