কুমিল্লার চান্দিনায় পরীক্ষায় নকল করতে না দেওয়ায় শিক্ষকদের উপর হামলা ও বিদ্যালয়ের জানালার কাঁচ, ফুলের টব ভাঙচুর করে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
মঙ্গলবার চান্দিনা উপজেলার মহিচাইল জোবেদা মমতাজ উচ্চ বিদ্যালয় ভেন্যু কেন্দ্রে গণিত পরীক্ষা শেষে ওই ঘটনা ঘটে।
অপরদিকে একই সময়ে দোল্লাই নবাবপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভেন্যু কেন্দ্রে এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করার ঘটনায় হামলার ঘটনা ঘটে। পরে চান্দিনা থানা পুলিশ ওই দু’টি কেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মহিচাইল জোবেদা মমতাজ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের একাধিক শিক্ষক জানান, ভেন্যু কেন্দ্রের ১৬ ও ২১ নম্বর হলে পরীক্ষা দিচ্ছিল মহিচাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ওই কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট থাকায় মোটামুটি কঠোরতার মধ্য দিয়েই চলছিল গণিত পরীক্ষা। আর এতেই মহিচাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অসদুপায় অবলম্বন ছাড়া আশানুরূপ পরীক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়।
তবে কেন্দ্র থেকে ম্যাজিস্ট্রেট চলে যাওয়ার সাথে সাথে বহিরাগতরা নকল নিয়ে ১৬ ও ২১ নম্বর হলে প্রবেশ করে। এ সময় কর্তব্যরত শিক্ষকরা বাধা দেয়। পরীক্ষার্থীদের কাছে নকল পেয়ে তাদের খাতা নিয়ে যায়। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বহিরাগত লোকজন নিয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে খাতা কেড়ে নেয়, শিক্ষকদের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
মহিচাইল জোবেদা মমতাজ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ২১নং হলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক গোলাম রসুল জানান, ‘পরীক্ষা চলাকালীন বহিরাগতরা এসে আমার দায়িত্বে থাকা কক্ষে নকল সরবরাহ করে। আমি বাধা দেওয়ায় আমাকে হেনস্তা করে। আমাকে নিরাপত্তা দিতে এসে অপর শিক্ষক সন্ধ্যা রাণীকেও লাঞ্ছিত করে।’
অপরদিকে নবাবপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভেন্যু কেন্দ্রে এক পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করায় ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও বহিরাগতরা এসে কেন্দ্রে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কেন্দ্র সচিব মো. মোজাহারুল ইসলাম জানান, ‘শিক্ষার্থী বহিষ্কারের পর বহিরাগতরা কেন্দ্রে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে।’
চান্দিনা থানার ওসি মো. আবুল ফয়সল জানান, ‘আমি নিজেই ওই দুই কেন্দ্রে যাই এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। ঘটনার তদন্ত চলছে।’
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নেহাশীষ দাশ জানান, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে কেন্দ্র সচিবকে নির্দেশ দিয়েছি। নকল মুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণে উপজেলা প্রশাসন কঠোর ভূমিকা পালন করবে।’
এদিকে, এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার গণিত পরীক্ষায় ৩ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে চান্দিনা আল-আমিন ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে দুই জন এবং দোল্লাই নবাবপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক জন বহিষ্কার করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন