ঘুষ না দিলেই হয়রানি। টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না শেরপুর বিআরটিএ অফিসে। সরকারি এই অফিসে অনেকটা অপেন সিক্রেট চলে ঘুষের লেনদেন। টাকা না দিলে গাড়ির মালিক বা চালকদের নানা ধরনের কাগজ লাগবে বলে ঘুরাতে থাকলেও আবার টাকা দিলেই সহজেই মিলে সরকারি সেবা।
সব মিলিয়ে সরকারি এই সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠানাটি এখন সাধারণ চালক ও গাড়ির মালিকদের কাছে ঘুষ ও হয়রানির কার্যালয় হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
গাড়ির মালিক, চালক ও বিশ্বস্ত সূত্র জানা গেছে, বেশ কয়েকমাস ধরে শেরপুর পুলিশ কড়াকড়ি করে গাড়ির নানা কাগজপত্র দেখছে। কাগজপত্র ঠিক না পেলেই জরিমানা ও মামলায় পড়তে হচ্ছে। অভিযানের পর থেকেই গাড়ির মালিক-চালকরা মামলা থেকে রক্ষা পেতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন বিআরটিএ অফিসে। আর এই সুযোগে বিআরটিএ অফিস নানা ফাঁদ পেতে সরকারি ফিসের বাইরে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে বাড়তি টাকা।
সূত্র জানায়, উৎকোচের টাকা আদায়ের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ওই অফিসের কেউ সরাসরি জড়িত থাকে না। খুব কৌশলে এই টাকা আদায়ের জন্য অফিসেই আছে অন্তত ছয়জন নির্ধারিত লোক। আর বিভিন্ন জায়গাতে নিয়োজিত আছে আরও অন্তত ১৫ জন দালাল। কেউ গাড়ির কাগজের জন্য অফিসে গেলেই সরকারি কর্মকর্তারা কৌশলে পাঠিয়ে দেন ওই দালালদের কাছে। ওখানেই শুরু হয়ে যায় দাম-দর। দাম-দর ঠিক হয়ে গেলে কাগজপত্র আর তেমন লাগে না, মিলে যায় কাঙ্খিত লাইসেন্স।
জানা গেছে, বিআরটিএ অফিস ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে ১৪ প্রকারের কাগজি সেবা দিয়ে থাকে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া আরও অন্তত ১৫টি সেবা বিআরটিএ দিয়ে থাকে। ২/১ টি বাদে সব সেবাতেই ভুক্তভোগীদের গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। তবে লোক ভেদে এই টাকার রেট কমবেশী হয়। অসংখ্য ভুক্তভোগী জানিয়েছে হয়রানি আর ঘুষ আতংকে তারা বিআরটিএ অফিসে যেতেই ভয় পান।
এসব অভিযোগের বিষয়ে বিআরটিএ এর সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ্ বলেন, এখানে অনিয়ম বা ঘুষ নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে লোকবল সংকটের কারণে অনেক কাজ করতে একটু সময় লাগে। প্রতিমাসে ৩ শত লোকের সেবা দেওয়ার ক্যাপাসিটি থাকলেও সেবা দিতে হচ্ছে প্রায় ১২ শত লোকের। এছাড়া আজ পর্যন্ত আমার কাছে কেউ কোন ঘুষ অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ করেনি। যদি করে তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল