নরসিংদীর পলাশে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে রাতভর আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সম্রাট (১৬) নামের এক কিশোরের বিরুদ্ধে। ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগ, এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর পরিবার আইনের আশ্রয় নেওয়ার উদ্যোগ নিলে স্থানীয় ইউপি সদস্য কৌশলে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ের ঘোষণা দেন। কিন্তু নোটারী পাবলিকে ওই শিক্ষার্থীর বয়স গোপন করা হয়েছে।
এছাড়া নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়েটি গত ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হলেও সংশ্লিষ্ট আইনজীবী তাতে ধর্ষণের ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ ১৩ ফেব্রুয়ারির তারিখ দিয়ে নোটারি পাবলিক সম্পন্ন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর মা। এঘটনায় মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কাছে আইনগত সহায়তা চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাতে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বাড়ির পাশে একটি ওরশ শরীফের অনুষ্ঠানে যায় ওই ছাত্রী। অনুষ্ঠানের ফাঁকে সে একটি দোকানে গেলে পলাশ উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের আবদুল বাছেদের ছেলে মো. সম্রাট স্থানীয় দুই যুবক নয়ন ও আকরামের সহায়তায় ওই ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায়। ছাত্রীটির পরিবারের লোকজন সারারাত খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। পরদিন শনিবার সকালে সম্রাটের বাড়ি থেকে তাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তখন ওই ছাত্রী তার পরিবারকে জানায়, সম্রাট তাকে রাতভর ধর্ষণ করেছে।
ভিকটিমের মা আরও জানায়, এঘটনায় তারা আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে জিনারদী ইউপি সদস্য মো. মনিরুজ্জামান আজাদের নেতৃত্বে মাঝেরচর এলাকার মদন মিয়া ও পলাশেরচর এলাকার আওলাদের মাধ্যমে আপোষ মীমাংসার কথা বলে গত রবিবার নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ মোমেন নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহের ঘোষণা দেন।
ছাত্রীর মা বলেন, আমার স্বামী একজন রিকশাচালক। আমরা গরীব ও অসহায়। সম্রাটের পরিবার বিত্তশালী। তাই পয়সার জোরে মেম্বারের মাধ্যমে আমাদের সম্পূর্ণ অমতে উকিলের মাধ্যমে নোটারি পাবলিক করেছে। আমার মেয়ের বয়স প্রকৃতপক্ষে ১২ বছর। কিন্তু নোটারি পাবলিকে আমার মেয়ের বয়স গোপন করে প্রাপ্ত বয়স ১৮ দেখানো হয়েছে। আমি এই ঘটনার জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য মো. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া আজাদ বলেন, আমি যখন ঘটনাটি শুনেছি তখন চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। পাশাপাশি তাদেরকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলি। নোটারি পাবলিক হয়েছে কিনা আমি কিছুই জানি না। আমি সবসময় নোটারি পাবলিকের বিরুদ্ধাচরণ করি। কারণ নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে অনেক তথ্য গোপন করা হয়।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. নাসির উদ্দিন বলেন, এঘটনায় ছাত্রীর মা একটি অভিযোগ করেছেন। আমরা মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার রাতে অভিযুক্তের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছি। ছেলেটি পলাতক রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক