ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের বাড়িউড়া এলাকায় ১৬শ শতাব্দীতে নির্মিত বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের অধীনে সংরক্ষিত নিদর্শন ‘হাতিরপুল’ ও প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থাকা দুটি কবরস্থান ও একটি মসজিদ রক্ষা করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রশস্তকরণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। এই দাবিতে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।
এলাকাবাসীর পক্ষে বাড়িউড়া গ্রামের জসীম উদ্দিন লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেন, বাড়িউড়া বাজারের পূর্ব প্রান্তে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ঘেঁষা উত্তর পাশে ঐতিহাসিক হাতিরপুলটির অবস্থান। ১৬৫০ সালে মুঘল আমলে সরাইলের দেওয়ান শাহবাজ আলী সরাইল থেকে শাহবাজপুর হয়ে হরষপুরে যাতায়তে হাতির বিশ্রামের জন্য একটি ছাউনি নির্মাণ করেন। যা পরে ‘হাতিরপুল’ নামে পরিচিত হয়ে উঠে। এই সেতুটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে সরাইলের ঐতিহ্য, যা এখন প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ।
উপজেলার ইসলামাবাদ থেকে বারিউড়া হয়ে শাহবাজপুর গ্রাম পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উত্তর পাশে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে তিনশো বছরের পুরনো দুটি কবরস্থান। সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের বাড়িউড়া, ইসলামাবাদ ও বছিউড়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের মৈন্দ গ্রামের মরদেহ সেখানে সমাহিত করা হয়। এছাড়া বিকল্প আর কোন কবরস্থান নেই।
প্রায় চল্লিশ বছর আগে নির্মিত বারিউড়া বাজার জামে মসজিদটিও মহাসড়কের উত্তর পাশে অবস্থিত। এই মসজিদে বাজারের ক্রেতা, ব্যবসায়িসহ সাধারণ মানুষ নামাজ আদায় করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি বর্তমানে দুই লেনের। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে এটিকে দুটি সার্ভিস লেনসহ ছয় লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চলতি বছরেই এর কাজ শুরু হবার কথা রয়েছে। এজন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন সম্প্রতি সড়কের উত্তর পাশের জায়গা অধিগ্রহণ করতে মাপজোক করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামীম আল মামুন বলেন, সার্ভে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত নয়। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাথমিকভাবে এটি করা হয়। এলাকাবাসীর দাবির বিষয়টি সম্পর্কে ইতোমধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ওয়াকিবহাল। এসব বিবেচনা করেই মহাসড়ক প্রশস্তকরণ কাজের প্রকল্প চূড়ান্ত হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল