নেত্রকোনার পূবর্ধলা উপজেলায় একই বাড়িতে পরিবারের সকল সদস্য কানে শোনেন না। ৭০ বছর বয়সি মো. বাহার উদ্দিনের ছেলে নাতনিসহ সবাই যেনো জীবনের কাছে আজ পরাজিত। তাদের খোঁজ রাখে না কেউ। পূর্বধলা উপজেলার জামধলা বাজারের পাশেই তাদের বসবাস।
দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আব্দুল হাশিম (৫৫)। তিনি দিন মজুরের কাজ করতেন। নানা অসুস্থতায় এখন আর কাজে যেতে পারেন না। স্ত্রী মারা গেছেন বছর তিনেক হয়। দুই মেয়ে তিন ছেলে। তারাও বাবা দাদার মতোই কানে শুনেন না। তবে ইশারায় সব বুঝেন। বড় দুই মেয়েকে বিয়ে দিলেও এক মেয়ে হাসিনা বাবার বাড়িতেই থাকেন। কাজ করেন মাটিকাটা শ্রমিকের।
১৭ বছরের ছেলে মঞ্জু কাজ করে সেলুনে। সারা দিনে আয় করেন একশ থেকে দেড়শ টাকা। কোন দিনে আয় হয়, আবার কোনদিন হয়ও না। কানে না শোনার কারণে অনেক সময় মানুষ আসেও না তাদের কাছে। তার ছোট আরো দুই ভাই রমজান (১৩) ও বাদল (৭)। বড় ভাই মঞ্জুর কথা বলাতেও রয়েছে সমস্যা। স্পষ্ট হয় না কথা। এভাবেই দিন যায় তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পর্বধলা উপজেলায় শ্রবণ প্রতিবন্ধীর সংখ্যা অনেক বেশি। শতকরা ২৫.২০ ভাগ।
নেত্রকোনা প্রতিবন্ধী সেবা সাহায্য কেন্দ্রর ক্লিনিক্যাল ফিজিওি থেরাপিস্ট ডা. কাজী মুশফেকুর রহমান জানান, গত ৩ ফেব্রুয়ারি পূর্বধলায় তিন দিনের মোবাইল ক্যাম্প করলে সেখানে শুধুমাত্র শ্রবণ প্রতিবন্ধীই আসে ১২৩ জন। তিনি জানান ওই এলাকার কোন জরিপ নেই। তারপরও মোবাইল ক্যাম্পিংয়ে এমন রোগী পাওয়া গেছে। সরকারী ভাবে জরিপে আসলে চিকিৎসা দেয়া কথা জানান তিনি।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মো. আলাল উদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, উন্মুক্ত ভাবে প্রতিবন্ধী তালিকা তৈরী হয়। সেখানে কেন ওই পরিবারটি আসেনি তার খোঁজ নেবেন। এই বছর এখনো বাছাই শুরু হয়নি। তবে তাদেরকে খোঁজ করে সমাজসেবার আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন