বরিশালে প্রেমের ফাঁদে ফেলে উচ্চবিত্তদের জিম্মি করে অশালীন ছবি তুলে গোয়েন্দা পুলিশের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নারীসহ ১০ জনকে আটক করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন শরীয়তপুরের গোসাইরহাট নতুন বাজার এলাকার মো. মতিন মুন্সির ছেলে মো. জাকির হোসেন (৩৮) ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা মনি (৩০), নগরীর কাশীপুর বাজার শিববাড়ি এলাকার মৃত ছালাম বয়াতীর ছেলে মামুন বয়াতী (৩৪), নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউনিয়া প্রধান সড়কের মো. ইছাহাক হাওলাদারের ছেলে মো. সেলিম হাওলাদার (৪৫), কাউনিয়া মহাশ্মশান এলাকার ভাড়াটিয়া মো. আনসার আলী হাওলাদারের ছেলে মকবুল হোসেন (৩৫) ও তার স্ত্রী লিজা বেগম (২৫), নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের চহঠা এলাকার মৃত আব্দুর রহমান তালুকদারের ছেলে মো. আরিফুর রহমান তালুকদার (৩০), ঝালকাঠীর কাঠলিয়া আওড়াবুনিয়া এলাকার মো. জাহাঙ্গীর মোল্লার মেয়ে মোসাম্মৎ ফারজানা আক্তার ঝুমুর (২৫), নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ফাকরবাড়ি রোডের আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী খুশী বেগম (৪০) এবং সদর উপজেলার চরকাউয়া এলাকার নুরুল ইসলামের মেয়ে আশা আক্তার (২০)।
আজ বুধবার দুপুরে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এসময় নগর বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, নগরীর জনৈক ঠিকাদার সোহেল আল মাসুদ প্রতারনার শিকার হয়ে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।
অভিযোগে তিনি পুলিশকে জানান, বরিশাল বিএম কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক ছাত্রীর সাথে মুঠোফোনে এক মাস আগে তার (মাসুদ) পরিচয় হয়। এর সুবাদে প্রতিদিন মুঠোফোনে তাদের দুইজনের কথা হয়। ফোনে ঘনিষ্ঠাতার এক পর্যায়ে ঝুমুর মাসুদের সাথে দেখা করার প্রস্তাব দেয়। পরে ওই শিক্ষার্থীর সহযোগী শ্রীনাথ চ্যাটার্জী লেনের জনৈক বাবু মিয়ার ভাড়াটিয়া মামুন বয়াতীর বাসায় তারা দেখা করে। অল্প সময়ের মধ্যেই মাসুদকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলে সেখানে উপস্থিত কয়েকজন ব্যক্তি। এর কিছুক্ষন পরেই সেখানে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন লোক প্রবেশ করে। তারা পুলিশের মতো আচরন করে এবং মোটা অংকের দাবি করে। না হলে তাকে গ্রেফতারের ভয় দেখায়। বাধ্য হয়ে মাসুদ তাৎক্ষনিক তাদের ৯ হাজার এবং পরে বিকাশের মাধ্যমে আরও ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে তাদের জিন্মিদশা থেকে মুক্ত হয়।
বিষয়টি গোয়েন্দা পুলিশকে জানানো হলে গত মঙ্গলবার রাতে ওই বাসাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ১০জন প্রতারককে আটক করা হয়। এর মধ্যে ৫জন পুরুষ এবং ৫জন নারী। আটককৃতরা এই প্রক্রিয়ায় আরও বেশ কয়েক জনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে এবং তাদের সাথে আরও অনেকে সম্পৃক্ত বলে পুলিশকে জানিয়েছে। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের আটকের চেষ্টা চলছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন উপ-কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ