ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে পা কেটে হাতে নিয়ে মিছিল করায় জড়িতদের কেউ ধরা পড়েনি। তবে পুলিশ বলছে, দু’পক্ষের দুই নেতাসহ ৪৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে মিছিলে যোগ দেয়া ১২-১৪ জন রয়েছে।
এদিকে পা হারানো মোবারক মিয়ার (৪৫) অবস্থা সংকটাপন্ন। গত রবিবার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের থানাকান্দি গ্রামে দাঙ্গাবাজরা মোবারকের বাম পা গোড়ালীর ওপরের অংশ থেকে কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এরপর কাটা পা হাতে নিয়ে আনন্দ মিছিল করে। এসময় ‘জয়বাংলা’ স্লোগান দেয় তারা।
ঘটনার পরপরই গুরুতর আহত মোবারক তাকে কোপানোয় জড়িত বলে থানাকান্দি হাতবাড়ি গ্রামের সিরাজের ছেলে খোকন, হাজিরহাটি গ্রামের মাঈনুদ্দিনের ছেলে রুমান, জিল্লুর ছেলে শাহিন ও মালির ছেলে জাবেদের নাম প্রকাশ করে। বাকিদের সে চিনতে পারেনি বলে জানায়।
জানা গেছে, ঘটনার শিকার হাজিরহাটি গ্রামের আবু মেম্বারের বাড়ির মোবারক ঢাকায় রিকসা চালাতেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাড়িতে চলে আসেন। মোবারককে ঘরে ঢুকে কোপানো হয় বলে জানান তার স্বজনরা। ঝগড়া শুরুর পর ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলো সে। দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে কোপানো হয় তাকে। মোবারকের স্ত্রী সাবিয়া জানান, তার সামনেই মোবারককে মাটিতে সোজা করে শুইয়ে ফেলে। এরপর কোপাতে শুরু করে। এসময় তিনি অদূরেই থাকা পুলিশের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন সাহায্যের জন্যে। তার স্বামীকে মেরে ফেলা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাকে উল্টো ধাওয়া দেয়। সাবিয়া জানান, ঘটনাস্থলের কাছে ৩০/৪০ জন পুলিশ অবস্থান করছিলো। তারা ঝগড়া থামানোর কাজ না করে আসামি ধরাতেই ব্যস্ত ছিলো। মোবারক গ্রামের কোন ঝগড়া-দলাদলিতে ছিলেন না বলেও জানান তার স্ত্রী।
মোবারকের এক চাচাতো ভাই শাহজালাল জানান, শারিরীক অবস্থা ভালো নয় মোবারকের। তার বাঁচা কঠিন। ডান পা-ও কুপিয়ে প্রায় বিচ্ছিন করা মতো অবস্থা করেছিল। ডান হাতে ৭টি এবং বাম হাতে ৩টি কোপ দেয়া হয়। পিঠেও রয়েছে ৩টি কোপ। ঘটনার পরপর মোবারককে প্রথমে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
শাহজালাল জানান, ১০/১২ জন মিলে কুপিয়েছে। ৪/৫জন ছাড়া মোবারক সবাইকে চিনতে পারেননি। হাজিরহাটির খায়েশ মিয়ার ছেলে কাশেম, বারেক মিয়ার ছেলে আরিফ এবং হাতবাড়ি গ্রামের সিরাজের ছেলে খোকনের সাথে তার আরেক ভাই সোহেলও মোবারকের ওপর হামলায় জড়িত বলে জানতে পেরেছি আমরা।
পৈশাচিক ঘটনায় জড়িতদের সবাই এখনো পুলিশের ধরাছোয়ার বাইরে। তবে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে দু-পক্ষের নেতা ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান ও কাউসার মোল্লাসহ ৪৪জনকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছেন নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রনজিৎ রায়।
তিনি জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার একটি অভিযোগ দিতে পারে। এতে হয়তো ঘটনায় জড়িতদের নামধাম থাকতে পারে। এটি পেলেই আমরা বলতে পারবো কারা কারা এ ঘটনায় জড়িত।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল