৩ জুলাই, ২০২০ ২২:৪১

উত্তরের বন্যার পানির প্রভাবে মেঘনায় ভাঙন বাড়ছে

রাহাত খান, বরিশাল:

উত্তরের বন্যার পানির প্রভাবে মেঘনায় ভাঙন বাড়ছে

উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানির প্রভাবে বরিশালের মেঘনাসহ বিভিন্ন নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নদী বিধৌত বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন তীব্র হচ্ছে। গত কয়েকদিনে জেলার হিজলায় নদী ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী তীরবর্তী মানুষ। 

গত বছর মেঘনার মূল মোহনা পুরাতন হিজলা লঞ্চঘাট থেকে বাউশিয়া হয়ে দড়িরচর-খাজুরিয়া (বামনীরচর) পর্যন্ত বেপরোয়া নদী ভাঙন শুরু হয়। গত এক বছরে ওই উপজেলার বাউশিয়া গ্রাম অনেকটাই মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ওই গ্রামের স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, বাজার নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে আগেই। 

পুরাতন হিজলা লঞ্চঘাটের টার্মিনাল এখন গাছে বাঁধা, কোস্টগার্ডের ৫ একর জমির সিংহভাগ নদীগর্ভে বিলীন। প্রস্তাবিত হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জের সংযোগ ফেরীঘাট কোরবানের রাস্তার মাথার স্থাপনাও বিলীন নদীতে। ওই এলাকায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দাঁড়িয়ে আছে মেঘনা তীরে। যে কোন সময় বিদ্যালয় ভবনটি নদীতে ধ্বসে পড়তে পারে। গত কয়েক বছরে মেঘনা নদীর ভাঙনে হিজলা উপজেলা ভূখন্ডের মানচিত্র বদলে গেছে। 

গত কয়েক দিন ধরে মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে হিজলার টেকের সালাউদ্দিন খানের বাড়িসহ ১২টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত কয়েক দিন ধরে নদী ভাঙন তীব্র হওয়ায় উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন টেকের বাজার, স্থানীয় খান বাড়ি, ফকির বাড়ি, সরদার বাড়ি, মোল্লা বাড়ি ও হাওলাদার বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। 

এছাড়া বড়জালিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বাউশিয়া, দক্ষিণ পশ্চিম বাউশিয়া, মধ্য বাউশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি সেতু এবং একটি হাফেজি মাদ্রাসা নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে বলে জানান স্থানীয় ৮নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ঝন্টু হাওলাদার। 

বড়জালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ তার এলাকার নদী ভাঙন দ্রুত প্রতিরোধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম জানান, নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে হিজলার বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন তীব্র হয়েছে। সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) হিজলার কোথায় কি ধরনের নদী ভাঙন হচ্ছে এবং এতে কি পরিমান ক্ষতি হচ্ছে তার রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। তার রিপোর্ট পেলে আগামী সপ্তাহে জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেয়া হবে। 

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল কুমার সেন বলেন, হিজলা উপজেলাকে নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষার জন্য প্রায় ৫শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া আপদকালীন সময়ের জন্য ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন পেলে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত কাজ শুরু হবে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর