৬ জুলাই, ২০২০ ১২:৪২

বাগেরহাটে সুপেয় পানি সংকট সমাধানে বসানো হচ্ছে ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট

বাগেরহাট প্রতিনিধি :

বাগেরহাটে সুপেয় পানি সংকট সমাধানে বসানো হচ্ছে ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট

উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে লড়াই করা মানুষের সুপেয় ও নিরাপদ তীব্র পানির সংকট সমাধানে ৫টি উপজেলায় বসানো হচ্ছে ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট। যার মাধ্যমে ভূ-উপরিস্থ পানিকে শতভাগ জীবাণুমুক্ত করে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে সাধারণ মানুষের মধ্যে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ভূ-উপরিস্থ পানি পরিশোধনের মাধ্যমে রাঙ্গামাটি, বাগেরহাট ও ফরিদপুর জেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাট জেলায় ৭৫টি ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট স্থাপন করা হচ্ছে। 

বাগেরহাট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জানায়, বাগেরহাট জেলায় যে ৭৫টি ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিটের মধ্যে কচুয়া উপজেলায় ৯, মোরেলগঞ্জে ২৫, শরণখোলায় ১৮, মোংলায় ১৪ এবং চিতলমারী উপজেলায় ৯টি ইউনিট স্থাপনের কাজ চলছে। আগামী ৩০ আগস্টের মধ্যে সব ইউনিটের কাজ শেষ হবে। আধুনিক প্রযুক্তির একটি ইউনিট স্থাপনে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে। পুকুর বা ভূ-উপরিস্থ যেকোনো উৎস থেকে বৈদ্যুতিক মটরের মাধ্যমে পানি সংগ্রহ করা হবে। ওই পানি কোনো রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার ছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে ৪টি ধাপে পরিশোধনের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সরবরাহ ট্যাংকিতে যাবে। ওই ট্যাংকিতে পানি সরবরাহের জন্য দুটি ট্যাব থাকবে। এসব ট্যাব থেকে মিনিটে ১৬ লিটার হিসেবে ঘণ্টায় ৯৬০ লিটার বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যাবে। যা ওই এলাকার বিপুল পরিমাণ মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা পূরণ করবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান আছাদুজ্জামান মিলন জানান, জেলার সব থেকে বেশি লবণাক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলা শরণখোলা। এই উপজেলার অধিকাংশ মানুষ সুপেয় পানির সংকটে ভোগে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট পানির চাহিদা মেটাবে। তবে চারটি ইউনিয়নের বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যার এই উপজেলার জন্য ১৪টি ইউনিট যথেষ্ট নয়। এই এলাকার পানির চাহিদা পূরণের জন্য আরও বেশি ইউনিট স্থাপনের দাবি জানান এই জনপ্রতিনিধি।

এদিকে জেলার ৯টি উপজেলার শুধু ৫টিতে উপজেলায় সুপেয় পানির জন্য এ প্রকল্প থাকায় বাগেরহাট সদর, রামপাল, ফকিরহাট ও মোল্লাহাট উপজেলার সাধারণ মানুষ তাদের এলাকায়ও এই প্রকল্প সম্প্রসারণের দাবি জানিয়েছেন। রামপাল উপজেলার হুড়কা ইউনিয়নের সুদেব গোলদার বলেন, জেলার ৫টি উপজেলায় ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট বসানো হচ্ছে। যার মাধ্যমে অনেক মানুষ সুপেয় পানি পাবে। আমাদের এই উপজেলায়ও এ ধরনের মেশিন বসালে মানুষের সুপেয় ও নিরাপদ তীব্র পানির সংকট সমাধান হত।

বাগেরহাট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এফ এম ইসমাইল হোসেন বলেন, ভূ-উপরিস্থ পানি পরিশোধনের মাধ্যমে রাঙ্গামাটি, বাগেরহাট ও ফরিদপুর জেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের মাধ্যমে বাগেরহাট জেলার ৫টি উপজেলায় ৭৫টি ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট স্থাপনের কাজ ৩০ আগস্টের মধ্যে শেষ হবে। প্রতিটি ইউনিট থেকে ঘণ্টায় ৯৬০ লিটার পানি পাবে স্থানীয়রা। যা বিপুল জনগোষ্ঠীর সুপেয় পানির চাহিদা মেটাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট স্থাপনের কাজ শেষ হলে এই প্রকল্প দেখভালের জন্য এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি করা হবে, যারা এই ফিল্টেশন ইউনিটটি পরিচালনা করবেন। এদের মাধ্যমে এই ইউনিটের বিদ্যুৎ বিলসহ রক্ষণারেক্ষনের ব্যয় পরিচালিত হবে।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর