৬ জুলাই, ২০২০ ২০:২৯

কুড়িগ্রামে নদীর পানি নেমে যাচ্ছে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে নদীর পানি নেমে যাচ্ছে

কুড়িগ্রামে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য ছোট নদনদীর পানিও হ্রাস পেয়েছে। ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে হ্র্রাস পেয়ে বিপদসীমার মাত্র ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড এ তথ্য নিশ্চিত করে।

পানি কমছে এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে কমে বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে চিলমারী পয়েন্টে কমে ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে, পানি কমতে শুরু করায় এ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, ধীরে ধীরে সবগুলো নদীর পানি কমে আসছে এবং বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতিও হচ্ছে। এ মাসে আরো একটি ভয়াবহ বন্যার আশংকা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। 

এদিকে, বন্যার পানি কমলেও আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন উঁচু বাঁধে থাকা মানুষগুলো এখনও বাড়ি ফিরতে শুরু করেনি। অনেকে আবারো বন্যার আশংকায় বাঁধেই থেকেই যাচ্ছেন। সদর উপজেলার কদমতলা এলাকার বাসিন্দা জলিল মিয়া জানায়, আমার বাড়িতে আজ প্রায় দুই সপ্তাহ যাবত পানি। এতদিন কষ্ট করে বাঁধে ছিলাম। বাড়িতে থাকার কষ্ট ছিল বলে বাঁধে এসে বউ বাচ্চাসহ ছিলাম। এখন পানি নেমে গেছে। বাড়িতে অনেক কাদা ও দুর্গন্ধ। পরিস্কার করব তারপর হয়তো মঙ্গলবার গিয়ে উঠব। কিন্তু হাতে কোন টাকা পয়সা নেই। কিভাবে বাড়ি মেরামত করব জানিনা।

অন্যদিকে, ঘর-বাড়ি তলিয়ে থাকা পরিবারগুলো পাকা সড়ক, বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এসব পরিবারের ঘর-বাড়ি থেকে বন্যার পানি সরে না যাওয়ায় তারাও ঘরে ফিরতে পারছে না। বন্যা দুর্গত এলাকায় চলছে গো খাদ্যের সংকট। কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে থাকায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থাও। 

এদিকে, গত কয়েকদিনের বন্যায় জেলায় কৃষি ও মৎস বিভাগে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় এ দুই বিভাগ। বন্যায় জেলার প্রায় ৮ শতাধিক পুকুর ও জলাশয়ের মাছ বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে। ফলে বিভিন্ন মৎসজীবীরাসহ এ বিভাগে প্রায় ৩ কোটি টাকার মাছ চাষসহ পোনার ক্ষতির শিকার হয়েছে। অন্যদিকে, ৯ হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নিমজ্জিত হয়েছে।

এর মধ্যে  বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের আমন বীজতলা ও বিভিন্ন শাক সবজি। তবে ধানের বীজতলার ক্ষতি পুষিয়ে আনতে কৃষক পর্যায়ে কমিউনিটি বীজতলা শীঘ্রই স্থাপন করা হবে বলে জানান এ বিভাগের উপপরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান। এছাড়াও বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন।

গত দুইদিন ধরে রাজারহাট উপজেলার কুমরপাড়া, সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রামে বাঁধে ধস, চিলমারী ও উলিপুরের কয়েকটি জায়গায়  দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। এ অবস্থায় বন্যার্ত ও নদী ভাঙনের শিকার মানুষজনের প্রয়োজন সাহায্য সহযোগিতা। 

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর