কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে দুধকুমর নদীর তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিনের নদী ভাঙনে বিলীনের পথে উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকডাঙ্গা ও চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রাম।
ভাঙনের শিকার হয়েছে ঐ গ্রামের ৩ টি মসজিদসহ কয়েকশ হেক্টর আবাদি জমি ও শতাধিক বসতবাড়ি। নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় হুমকিতে রয়েছে উপজেলার দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভাঙন কবলিত এলাকার নদী তীরবর্তী পরিবারগুলো।
তীব্র নদী ভাঙনের মুখে ভাঙন কবলিতরা ঘরবাড়ি সরানোর সুযোগটুকুও পাচ্ছেন না। কেউ কেউ দ্রুত বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন বলে জানান।
এলাকাবাসী জানান, বন্যার পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে দুধকুমর নদীর তীব্র ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। তীব্র এ নদী ভাঙনে বদলে যাচ্ছে এলাকার মানচিত্র। আতংকিত হয়ে পড়ছেন ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ। বসতভিটা, বাঁশঝার, বাগান ও আবাদী জমি চলে যাচ্ছে নদীগর্ভে। বসতভিটা হারিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়েছেন মানুষ।
ইসলামপুর গ্রামের আলাউদ্দিন ও আজগর আলী বলেন, প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে আমাদের বসতভিটা নদীতে হারিয়েছিলাম, তারপর আবার ফিরে পেয়েছি। কিন্তু আবার এবারের নদী ভাঙনে সেসব ভিটেমাটি হারালাম। এখন কি করি কোথায় যাই বুঝে উঠতে পারছি না।
পাইকডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, নদী যেভাবে ভাঙছে তাতে বিদ্যালয় দুটি রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই তিনি ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান। এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও দুধকুমর নদী ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শাহানারা বেগম মীরা বলেন, আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
তিনি বলেন, নাগেশ্বরী উপজেলার নুন খাওয়া থেকে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ী ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প ইতোমধ্যে প্রনয়ণ করেছেন। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
চরভূরুঙ্গামারী ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম ফজলুল হক জানান, পানি কমার সাথে সাথে আমারসহ কয়েকটি ইউনিয়নে নদী ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ওমর ফারুক জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বিত পরিদর্শন শেষে নদী শাসনের জন্য একটি প্রস্তাব ইতোমধ্যেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।কালজানি ও দুধকুমর নদীর ভাঙ্গন রোধে 'দুধকুমার নদী উন্নয়ন প্রকল্প' নামে একটি প্রকল্প তৈরীর কাজ চলছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল