সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিলাম ছাড়াই বগুড়ার শেরপুরে গাড়ীদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পাকা ভবন ভেঙে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি দামি গাছও কেটে নিয়েছেন তিনি।
মহাসড়ক সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণের অজুহাত দেখিয়ে গত দুইদিন ধরে সরকারি এই বিদ্যালয়ের গাছ কাটা এবং ভবনের মালামাল লুটের মহোৎসব চলছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হলেও অদৃশ্য কারণে অদ্যাবধি কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
জানা যায়, শেরপুর উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের গাড়ীদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পাকা ভবনটির আশি ভাগ ভেঙে ফেলা হয়েছে। কয়েকজন শ্রমিক ভাঙার কাজ করছিল। পাশাপাশি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লাগানো দামি দামি গাছও কেটে ফেলার কাজ করছিল শ্রমিকরা। এরপর ট্রলিতে তুলে ভেঙে ফেলা ভবনের ইট-রড, টিন-কাঠ, বাঁশ ও গাছের গুড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব কোথায় নেয়া হচ্ছে- এমন প্রশ্নে জবাবে ট্রলি চালক ও শ্রমিকরা জানান, বিদ্যালয়ের সভাপতি মোকাব্বর হোসেনের নির্দেশে এই কাজ করছেন তারা। আর কেটে ফেলা গাছগুলো তারই মালিকানাধীন করাত কলে (ছ’মিল) নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানান ওইসব শ্রমিকরা।
এসময় বিষয়টি সম্পর্কে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগমের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বর্তমানে মহাসড়ক সম্প্রসারণ কাজের জন্য এগার শতক জমি অধিগ্রহণ করায় বিদ্যালয়ের পশ্চিমপাশের প্রধান ফটকসহ একটি একতলা বিশিষ্ট পাকা ভবন ও সেমি পাকা দুইটি ক্লাসরুমসহ সব স্থাপনা সরিয়ে নেয়া প্রয়োজন। এছাড়া বড় বড় সাতটি গাছও কেটে ফেলতে হবে।
কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য গঠিত কমিটির মেয়াদও পেরিয়ে গেছে। এ কারণে কমিটির কোন বৈঠক ডাকা সম্ভব হয়নি। তাই ভবন ভাঙা ও গাছ কাটার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি মোকাব্বর হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, তিনি কেবল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশ পালন করছেন মাত্র।
শেরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. মিনা খাতুন জানান, নিলাম ছাড়াই ওই বিদ্যালয়ের ভবন ভাঙা হলেও ভবনের মালামাল ও কেটে ফেলা গাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য সভাপতিকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। পরবর্তীতে তার দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ বলেন, স্কুলের গাছ, ভবন ও ক্লাসরুম নিয়ম অনুযায়ী অপসারণ করার কথা। কিন্তু এক্ষেত্রে তা মানা হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি সরকারি সম্পদ লুটপাট করা হলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর