২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৩:৫৭

লালমনিরহাটে ফের প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট:

লালমনিরহাটে ফের প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

লালমনিরহাটে তিস্তা,ধরলাসহ সব নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, নতুন করে ফের প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। আগের বন্যার ধাক্কা সইতে না সইতে আবারও বন্যার মুখোমুখি এ জেলার তিস্তা ধরলা ও পারের মানুষরা। এ যেন মরার ওপর খারার ঘা। ভাঙনে বিলীন গ্রামের পর গ্রাম বসতবাড়ি, আবাদি জমি। একের পর এক ভাঙ্গনের কবলে দিশেহারা তিস্তা ধরলা পাড়ের মানুষ।

বৃহস্পতিবার সকালে লালমনিরহাটে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার  উপর দিয়ে এবং শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার  উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  

স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটের সবকটি নদ-নদীর পানি বেড়েছে। 
জেলায় পানিবন্দি পরিবারে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরা পড়েছেন মহাবিপাকে। পানিবন্দি এলাকায় আমন ধান ও সবজি ক্ষেত বন্যায় ডুবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। গবাদি পশু পাখি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বন্যা কবলিত এলাকা কৃষকরা।

মহিষখোচার গোর্বধন গ্রামের কৃষক জলিল মিয়া বলেন, আগের বন্যার কষ্ট না ভুলতে ফের বন্যা। পানি আর পানি। ঘরের ভিতর মাচাং বানিয়ে কোনোরকম বেঁচে আছি। পানি কবে নেমে যাবে আল্লায় জানে। 

বড়বাড়ি ইউনিয়নের ছোট বাসুবিড়া গ্রামের ঝন্টু মিয়া  বলেন, ধরলার পানি  বাড়ায় ছোট ও বড় বাসুবিড়া গ্রামের তামান (সকল) বাড়ি পানিতে ডুবে যায়। ঘরে পানি তাই রাস্তায় এসে বসে আছি। কিন্তু বৃষ্টিতে সেখানেও থাকা যায় না। হামার কষ্ট কায়ো দেখে না। 
এদিকে তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে তিস্তাপাড়ে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন। আকার ধারণ করেছে। জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের সিংগিমারী ও পাসাইটারী গ্রাম বিলীনের পর এখন ভাঙনের কবলে পড়েছে চৌরাহা গ্রাম। তিন দিনের ব্যবধানে গ্রামটির শতাধিক পরিবার তিস্তার কড়াল গ্রাসে বসতভিটা হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, টানা বৃষ্টি আর উজানে ঢলের কারণে তিস্তা  ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। গত ২৪ ঘন্টায় এ দুটি নদীর ভাঙ্গনে ৮৩ টি বসতবাড়ি বিলিন হয়েছে। ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ও বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।  তবে আস্তে আস্তে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার সম্ভবনা রয়েছে বলে মনে করেন।

বিডি প্রতিদিন/ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর