আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আজ বসতে পারে পদ্মা সেতুর ৩৫তম স্প্যান ‘টু-বি’। স্প্যানটি বসানোর জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। এর আগে স্প্যানটি বসানোর জন্য নদীতে নাব্য সংকট ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নিরসন করা হয়েছে। বর্তমানে নির্ধারিত পিয়ারের কাছে নদীর গভীরতা ভাসমান ক্রেন চলাচলের উপযোগী। আজ শনিবার সেতুর মাওয়া প্রান্তে ৮ ও ৯নং পিলারে বসানো হতে পারে স্প্যানটি। এতে দৃশ্যমান হবে সেতুর পাঁচ হাজার ২৫০ মিটার।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেনে। তিনি জানান, স্প্যানটি বসানোর জন্য শুক্রবার দিনভর ড্রেজিং করে নাব্যতার সমস্যা নিরসন করা হয়েছে। স্প্যান বসানোর জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ সকালে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানবাহী ভাসোমান ক্রেন তিয়ানের মাধ্যমে নির্ধারিত পিলার ৮-৯ এর অবিমুখে রওনা হয়েছে। কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে পিলারের কাছে ক্রেন পৌঁছাতে ২০ মিনিটের মতো সময় লাগবে। কারিগরি জটিলতা না থাকলে অথবা আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দুপুরের মধ্যে স্প্যানটি বসানোর কাজ শেষ হবে।
৩৫তম স্প্যানটি বসানোর হলে বাকি সাতটি স্প্যান মাওয়া প্রান্তে বসানো হবে। ইতোমধ্যেই জাজিরা প্রান্তে সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৩৫তম স্প্যান বসানো হলে আগামী ৪ নভেম্বর সেতুর ২ ও ৩নং পিলারে ৩৬তম স্প্যান ‘১-বি’, ১১ নভেম্বর ৯ ও ১০নং পিলারে ৩৭তম স্প্যান ‘২-সি’, ১৬ নভেম্বর ১ ও ২নং পিলারে ৩৮তম স্প্যান ‘১-এ’, ২৩ নভেম্বর ১০ ও ১১নং পিলারে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’, ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২নং পিলারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারে ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এ ছাড়া সেতুর দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্লাবের মধ্যে এক হাজার ৪১টির বেশি রোড স্লাব বসানো হয়েছে। আর দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্লাবের মধ্যে এখন পর্যন্ত বসানো হয়েছে এক হাজার ৫০০টির বেশি।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৪টি স্প্যান।
৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আগামী ২০২২ সালেই খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ