লক্ষ্মীপুরে শিশু শিক্ষার্থীদের (ছাত্রদের) ভয়ভীতি দেখিয়ে অনৈতিক (বলৎকার) কাজে বাধ্য করত মৌলভী মোবারক হোসেন (২৮) নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষক। মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) ঘটনার শিকার এক শিক্ষার্থীর পায়ুপথ দিয়ে রক্ত ঝরাকে কেন্দ্র করে বিষয়টি জানাজানির পর তোলপাড় সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে।
বিকালে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। ৬ জন ভিকটিমকে উদ্ধার করে নেয়া হয় পুলিশ হেফাজতে। একই সঙ্গে মাদ্রাসাটি বন্ধ করে দিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় স্থানীয় প্রশাসন।
ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার হাজিরপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম কালিদাসেরবাগ এলাকার মুসলিমাবাদ তা’লীমুল কোরআন ইসলামী একাডেমী নামের একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অভিযুক্ত শিক্ষক ওই মাদ্রাসার পরিচালক রায়পুর উপজেলার চর কাচিয়া গ্রামের শাহা আলমের ছেলে ও স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম বলে জানা যায়।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মৌলভী মোবারক হোসেন স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করে আসছিলেন। এর পাশাপাশি ২০১৮ সালে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার হাজিরপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম কালিদাসেরবাগ এলাকায় 'মুসলিমাবাদ তা’লীমুল কোরআন ইসলামী একাডেমী' নামে একটি প্রাইভেট মাদ্রাসা চালু করেন তিনি। এখানে ৩০ জন ছাত্র আবাসিকে থেকে লেখাপড়া করে আসছিল। শিক্ষক মোবারক একাধিক ছাত্রদের ভয়ভীতি দেখিয়ে শপথ করিয়ে তার সঙ্গে অনৈতিক কাজে বাধ্য করতেন। মোবাইলফোনে ভিডিও করে বিষয়টি গোপন রাখাসহ একাধিকবার অপকর্ম করে আসছিলেন তিনি।
সম্প্রতি এক শিশুর পায়ুপথ দিয়ে রক্ত ঝরাকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) ভিকটিম ছাত্রের মা বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। অন্যরাও মুখ খুলতে শুরু করে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মাদ্রাসা ঘেরাও করে অভিযুক্ত শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে পুলিশে সোপর্দ করে।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিনতানুর রহমান বলেন, একাধিক ছাত্রকে বলৎকারের অভিযোগে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষককে আটক করা হয়েছে, ভিকটিমদের উদ্ধার করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ