বড়দিন উৎসবের রঙ লাগেনি পাহাড়ে। করোনা ম্লান করেছে বড়দিন উৎসবও। তবুও সীমিত আয়োজনে পালিত হয়েছে পার্বত্যাঞ্চলে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন। পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে খ্রিস্ট সম্প্রদায়ভুক্ত বম, ত্রিপুরা, ম্রো, পাংখোয়া ও তঞ্চঙ্গ্যারা মূলত এ উৎসব পালন করে থাকে।
শুক্রবার সকাল থেকে পাহাড়ি পল্লীর গীর্জায় গীর্জায় প্রার্থনা, বাইবেল পাঠ, কীর্তন চলে দিনব্যাপী। প্রতিবছরের মত রাঙামাটির বিভিন্ন গীর্জায় রাত ১২টা এক মিনিটে কেক কেটে সূচনা করা হয় শুভ বড়দিন। পাহাড়ি খ্রিস্টান পল্লীগুলো সাজানো হয় বর্ণাঢ্য সাজে। তৈরি করা হয় ক্রিসমাস ট্রি ও যিশুর জন্মের সে গোশালাও। গীর্জাগুলোতে রঙিন বাতিতে করা হয় আলোক সজ্জা। বসতবাড়ির আঙ্গিনায়ও দেখা গেছে নানা রঙের কারুকাজ। তবে করোনার কারণে মানুষের ভিড় তেমন চোখে পড়েনি গীর্জাগুলোতে। লোক সমাবেশ, নাচ, গান ও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিলনা একেবারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটির ১০টি উপজেলার বিভিন্ন খ্রিস্টান পল্লী বিলাইছড়ির, নানিয়ারচর উপজেলার বেতছড়ি চাকমা খ্রিষ্টানপাড়া ও পুরানপাড়া, বালুখালী, রাঙামাটি শহরের আসামবস্তি, নতুনবস্তি, বন্ধু যীশুটিলা, রির্জাভ, কাপ্তাই উপজেলা, আনন্দ বিহার এলাকা, লুসাই পাহাড়, বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের উজানছড়ি, বেটলিং, কংলাক, লুইলুই, উল্ডলংকর গির্জাগুলোতে সীমিতভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালন করা হয় বড়দিন। তবে অন্যান্য বছরের মত এবার উৎসব ছিল ভিন্ন। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা নিজ নিজ পাল্লীর মধ্যে পালন করেছে এ বড়দিন উৎসব। পাড়ায় পাড়ায় আয়োজন করেনি কোন প্রীতিভোজ।
রাঙামাটি সদরের বালুখালি ইউনিয়ন হ্যাডম্যান (গ্রাম প্রধান) চেজল পাংখোয়া জানান, প্রতি বছর নানা আয়োজনে বড়দিন উৎসব পালিত হলে এবার তা হয়নি। করোনার কারণে উৎসবে কিছুটা সীমাবদ্ধতা আনা হয়েছিল। মানুষের স্বাস্থ্যের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ করোনার হাত থেকে বেঁচে থাকলে অনেক উৎসব পালন করা যাবে। তাই খ্রিস্ট পল্লীগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল বড়দিন উৎসব। মানুষের ভিড়, জন সমাবেশ হবে এমন কোন কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়নি।
এব্যাপারে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া বলেন, আমরা বড়দিন উৎসব পালন করেছি। তবে স্বাস্থ্যবিধি সচেতন থেকে। উৎসবে কিছুটা কাটছাট করা হয়েছে। ব্যাপক আকারে কিছু করা হয়নি করোনার কারণে। মানুষ যাতে উৎসব পালন করতে গিয়ে করোনার সংক্রমণে শিকার না হয় সে বিষয়টির উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র গীর্জায় প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন করা হয়েছে বড়দিন উৎসব।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন