দৃষ্টিহীন বৃদ্ধা উলফাতুন্নেছা ও রিজিয়ার দুঃখের সংসারের খবর পেয়ে তাদের দুঃখ ঘুচাতে ছুটে গেলেন মেহেরপুর সদর থানার এসআই শরীফ হাবিবুর রহমান। এই দুই অসহায় মা-মেয়ের জন্য ঘর করে দেবেন তিনি। সেইসঙ্গে ওই বৃদ্ধার দৃষ্টি ফেরাতে অপারেশনের ব্যবস্থাও তিনি করবেন।
জানা গেছে, ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা উলফাতুন্নেছা তার একমাত্র মেয়ে রিজিয়া খাতুনকে নিয়ে মেহেরপুর শহরের অদূরে কালাচাঁদপুরে ইয়ার আলীর বাঁশ বাগানে টিনের বেড়া দিয়ে কোনোরকমে বসবাস করে আসছিল। উলফাতুন্নেছার স্বামী দীর্ঘদিন আগে মৃত্যুবরণ করেন। রেখে গেছেন স্ত্রী উলফাতুন খাতুনসহ এক ছেলে ও মেয়েকে। মেয়ে রিজিয়ারও স্বামী গত হয়েছে আনেক আগেই। স্বামী মারা যাওয়ার পর তার ঠাঁই হয় মায়ের কাছেই। কিন্তু সংসারের হাল ধরার একমাত্র ছেলে তাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
তিন বছর আগে উলফাতুনের দুটি চোখ অন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে তিনি চলাফেরা করতে পারেন না। উলফাতুনের মেয়ে রিজিয় খাতুন অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা পান, তা দিয়েই কোনোরকমে দিন চলে। এমন খবর পেয়ে মেহেরপুর সদর থানার সেকেন্ড অফিসার শরীফ হাবিবুর রহমান বৃহস্পতিবার ব্যাগভর্তি বাজার নিয়ে ওই বাড়িতে উপস্থিত হন। ডাকতে থাকেন বৃদ্ধাকে। বৃদ্ধার মেয়ে রিজিয়া পুলিশ দেখে ভয়ে নির্বাক হয়ে পড়েন। তখন বৃদ্ধার মেয়েকে আশ্বস্ত করেন তিনি। বৃদ্ধাকে আনতে বলেন। বৃদ্ধা বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তার হাতে বাজারভর্তি ব্যাগ তুলে দিয়ে, তাকে জড়িয়ে ধরেন।
এরপর, তিনি জানান, বৃদ্ধার দু চোখ অপারেশন করাসহ ঘর তৈরি করার যাবতীয় ব্যবস্থা করে দেবেন তিনি। এস আই শরিফ হাবিবুর রহমান বলেন, মেহেরপুর শহরের কালাচাঁদপুরের দৃষ্টিহীন উলফাতুন্নেছার দুই চোখ অপারেশন করার ব্যবস্থা করা হবে। তার ঘর তৈরি করে দেব। এর জন্য যত টাকা খরচ হয়, সেই টাকা খরচ করব।
উল্লেখ্য, শরীফ হাবিবুর রহমান মেহেরপুর সদর থানায় যোগদান করার পর থেকেই গরিব, অসহায় মানুষকে আর্থিক ও খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করে আসছেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ