কিশোরগঞ্জে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও প্রেমিকের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুর রহিম এ আদেশ দিয়েছেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিজেশ্বর গ্রামের মৃত মোহন পাঠান ওরফে আজাদ পাঠানের মেয়ে সুমনা ওরফে শীলা ও তার প্রেমিক একই গ্রামের কাজী মমিন মাস্টারের ছেলে কাজী নজরুল ইসলাম। রায়ে তাদের প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের বিজেশ্বর গ্রামের মৃত মোহন পাঠান ওরফে আজাদ পাঠানের মেয়ে সুমনা ওরফে শীলা কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার দক্ষিণ পাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। এক পর্যায়ে ভৈরবপুর উত্তরপাড়ার মৃত দেওয়ান আলী ফকিরের ছেলে নবী হোসেন কবিরাজ তার প্রথম স্ত্রীর অজ্ঞাতে শীলাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্ত্রী শীলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজেশ্বর গ্রামের মমিন মাস্টারের ছেলে কাজী নজরুল ইসলামের সাথে পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরকীয়ার বিষয়টি স্বামী নবী হোসেন জানতে পারলে তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। এক পর্যায়ে নবী হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করে স্ত্রী শীলা ও তার প্রেমিক নজরুল।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর রাতে মেলায় যাবার কথা বলে নবী হোসেনকে ডেকে আনেন শীলা। পরে ভৈরবের ভাড়া বাসায় স্ত্রী শীলা ও প্রেমিক কাজী নজরুল ইসলাম ধারালো অস্ত্র দিয়ে নবী হোসেনকে খুন করেন। হত্যার পর তার হাত, পা ও মাথা কেটে আলাদা করে লাশ বস্তায় ভরে ভৈরব মেঘনা নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন একটি গুদামের পাশে ফেলে রাখে। এর তিনদিন পর অর্থাৎ ২৪ ডিসেম্বর স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বস্তায় লাশ উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে শীলাকে গ্রেফতার এবং তার দেখানো মতে হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতিও উদ্ধার করে পুলিশ। আদালতে ১৬৪ ধারায় শীলা স্বাীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। পরে হত্যার সাথে জড়িত কাজী নজরুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নরসিংহপুর গ্রামের মৃত জহুরুল হকের ছেলে আশরাফুল হক রাসেল ও ভৈরবের ভৈরবপুর উত্তর পাড়ার মৃত আফছর উদ্দিনের ছেলে শরীফকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আদালতে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে আসামি শীলা জামিনে বের হয়ে পালিয়ে যায়। তার অনুপস্থিতিতেই রায় দেওয়া হয়। রায়ে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আশরাফুল হক রাসেল ও শরীফকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার