ঢাকার মেরিন আদালতে যাত্রীবাহী নৌযানের দুইজন মাস্টারের (চালক) জামিন বাতিলের প্রতিবাদে ঢাকা-বরিশালসহ দেশের সকল দূরপাল্লা রুটে নৌযান ধর্মঘট শুরু করেছে নৌযান শ্রমিকরা। ওই দুই শ্রমিকের মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত সোমবার দুপুর ২টা থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘট অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন নৌযান শ্রমিক নেতারা।
এদিকে যাত্রীবাহি নৌযানে আকস্মিক ধর্মঘটে বেকায়দায় পড়েছেন দূরপাল্লার হাজার হাজার যাত্রীরা। তারা অনতিবিলম্বে নৌযান ধর্মঘট নিরসন করার দাবি জানিয়েছেন।
সোমবার দুপুর ২টায় বরিশাল নদী বন্দরে গিয়ে দেখা যায়, নদী বন্দরের পন্টুন থেকে ঢাকা অভিমুখী যাত্রীবাহি লঞ্চগুলো সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ঢাকাগামী যাত্রীদের লঞ্চ থেকে নামিয়ে দেয়া হয়।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন বরিশাল জেলা সভাপতি শেখ আবুল হাসেম জানান, বরিশাল-ঢাকা রুটের এমভি এ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার রুহুল আমীন এবং এমভি এ্যাডভেঞ্চার-১ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার জামাল হোসেন গতকাল সোমবার ঢাকার মেরিন আদালতে একটি মামলার হাজিরা দিতে গেলে তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক জুনায়দা বেগম। এ ঘটনায় নৌযান শ্রমিকরা সংক্ষুব্ধ হয়। কারান্তরীণ দুই নৌযান মাস্টারের মুক্তির দাবিতে তাৎক্ষণিক ধর্মঘট শুরু করেন নৌযান শ্রমিকরা।
একই রুটের এমভি কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার কবির হোসেন জানান, কারান্তরীণ দুই নৌযান মাস্টারকে মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত তাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।
এ্যাডভেঞ্চার লঞ্চ কোম্পানীর মালিক মো. নিজাম উদ্দিন জানান, ২০২০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘন কুয়াশার কারণে মধ্য বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের মেঘনা নদীতে এমভি এ্যাডভেঞ্চার-৯ এবং এমভি এ্যাডভেঞ্চার-১ লঞ্চের মধ্যে ঘর্ষণ (আঘাত) হয়। এতে কোন লঞ্চের কোন ক্ষতি কিংবা কোন হতাহত হয়নি। এ ঘটনায় কোন অভিযোগও ছিলো না। কিন্তু এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিআইডব্লিউটিএ মেরিন আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। গতকাল ওই দুই লঞ্চের দুই মাস্টার নিয়মিত হাজিরার অংশ হিসেবে ঢাকার মেরিন আদালতে হাজিরা দেয়। আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেয়।
এদিকে কোন ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া আকস্মিক দূরপাল্লা রুটের যাত্রীবাহি নৌযানে ধর্মঘট শুরু হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার যাত্রী। তারা অনতিবিলম্বে নৌযান ধর্মঘট নিরসনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা
