১১ এপ্রিল, ২০২১ ১২:২১

ঝড়-গরম বাতাসে মধুপুরে ১০৭ একর বীজ ধানে হিট ইনজুরি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি


ঝড়-গরম বাতাসে মধুপুরে ১০৭ একর বীজ ধানে হিট ইনজুরি

টাঙ্গাইলের মধুপুর বীজ উৎপাদন খামারে ঝড় ও গরম বাতাসের প্রভাবে ১০৭ একর জমি বোরো ধানে হিট ইনজুরিতে নষ্ট হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। ফলে বোরো ধানের  দুই জাতের বীজ উৎপাদন আশানুরূপ পাওয়া যাবেনা বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যতই দিন যাচ্ছে তত শীষ সাদা দৃশ্যমান হচ্ছে। এছাড়াও উপজেলার মহিষমারা ও কুড়ালিয়া ইউনিয়নসহ অন্যান্য স্থানেও এর প্রভাব দেখা দিয়েছে। 

বিএডিসি সূত্রে জানা যায়, মধুপুর বীজ উৎপাদন খামারে চলতি বোরো মৌসুমে বিভিন্ন জাতের ৩শ ২০ একর জমিতে বীজ ধান আবাদ করা হয়েছে। গত ৪ এপ্রিল রাতে ঝড় ও গরম বাতাসের কারণে খামারের নতুন জাতে ৩৫ একর জমির ব্রি-৮৪ ও ৭২ একর ব্রি-২৮ জাতের বীজ ধান হিট ইনজুরিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধানের শীষ নষ্ট হচ্ছে। এর মধ্যে ব্রি-৮৪ জাতের ৩৫ একর জমির ধানের ক্ষতি বেশি হচ্ছে। 

ফলে ফলন সামান্য হলেও বীজ ধান পাওয়া যাবে না বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্টরা। ব্রি-২৮ জাতের ফলন শতকরা ১৫-২০ ভাগ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গরম বাতাসের প্রভাবে নষ্ট হওয়া ধানের শীষ সাদা হয়ে যাচ্ছে। ফলে সাদা হওয়া শীষ গুলো চিটা হয়ে যাবে। যে কারণে বীজ ধান পাওয়া যাবেনা। 

মধুপুর বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক সঞ্জয় রায় জানান, চলতি বোরো মৌসুমে এ খামারে ৩শ ২০ একর জমিতে ধান বীজ চাষ করা হয়েছে। গত রবিবার রাতের ঝড় ও গরম বাতাসে ব্রি-৮৪ জাতের ৩৫ একর ও  ব্রি-২৮ জাতের ৭২ একর জমির ধান হিট ইনজুরিতে নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে। এর মধ্যে ব্রি-৮৪ জাতের ৩৫ একর জমির ধান মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ব্রি-২৮ জাতের ধানের ফলন শতকরা ১৫-২০ ভাগ নষ্ট হবে ধারণা করা হচ্ছে। 

তিনি আরোও জানান, যে সব ধান দুধ পর্যায়ের আগে ছিল সে গুলোর ক্ষতি বেশি হয়েছে। যে কারণে শীষ সাদা হচ্ছে। পরে কালো হবে। যার ফলে নষ্ট ধানে বীজ করা যাবেনা বলে তিনি ধারণা করছেন। গরম বাতাসে নষ্ট হওয়া ধানে প্রত্যাশা অনুযায়ী বীজ পাওয়া যাবেনা বলে আশংকা করছেন তিনি। 

পিরোজপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল্লাহ জানান, তাদের এলাকায় গরম বাতাসের কারণে বোরো ধানের ক্ষতি হচ্ছে। যা এর আগে কোনদিন দেখেননি। এবারেই প্রথম। তার ধারণা আশানুরূপ ফলন পাবে না তারা। 
বেলচুঙ্গি গ্রামের গোলাপ হোসেন জানান, তার ২ বিঘা জমির ধান ঝড় ও গরম বাতাসে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধানের শীষ সাদা হয়ে ধান গুলো ধীরে ধীরে কালো হচ্ছে। 

মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, মধুপুর উপজেলার চলতি মৌসুমে বুরো বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ১২ হাজার ৪শ ২০ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছে ১২ হাজার ৭শ ১১ হেক্টর। সম্প্রতি গরম বাতাসের কারণে মহিষমারা ও কুড়ালিয়া ইউনিয়নের ক্ষতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০০৭ সালে এমনটা হয়েছিল।

তিনি জানান, এটা মূলত আবহওয়া জনিত সমস্যা। এ মূর্হুতে কৃষকের ধানের জমিতে ২-৩ ইঞ্চি পানি জমিয়ে রাখার পরামর্শ তার। এখনও ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করা সম্ভব না হলেও এ বছর বোরো আবাদের লক্ষ্য মাত্রা অর্জনে প্রভাব পড়বেনা বলে তিনি জানান। 

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর