বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় সর্বত্র চলছে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার। নদী ও খালের পানি লবণাক্ত। এলাকার কোথাও গভীর নলকূপ কার্যকর নয়। অগভীর নলকূপের পানিও লবণাক্ত। অনাবৃষ্টি ও গ্রীষ্মের তাপদাহে পুকুরের পানি শুকিয়ে তলানিতে ঠেকেছে। তাই ওই দুষিত পানি বাধ্য হয়ে পান করতে হচ্ছে সবাইকে। একারণে বাড়ছে ডায়রিয়া, আমাশয়, চর্মরোগসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, শরণখোলা উপজেলায় নলকূপের পানি লবণাক্ত হওয়ার কারণে পন্ড স্যান্ড ফিল্টার (পিএসএফ) ও রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং এর উপর নির্ভর করতে হয় মানুষকে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ১১ শতাধিক পিএসএফ থাকলেও তার ৯ শতাধিক অকেজো। পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বাকিগুলোও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। যার কারণে তীব্র পানি সংকট চলছে।
শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদা ইয়াছমিন জানান, শরণখোলায় পানি সংকটের কারণেই ডায়রিয়ায় আক্রান্তসহ পানি বাহিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মঙ্গলবার একদিনেই ২১ জন ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি হয়েছে। শয্যা সংকটের কারণে তাই মেঝেতে রাখতে হচ্ছে। এনিয়ে ১এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ১৪০ জন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হলেও আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশী।
শরণখোলার সদর রায়েন্দা বাজারের বাসিন্দা ওয়াদুদ আকন, আ. হাকিম তালুকদার, সুনিল শীল, নির্মল বালা জানান, তাদের এলাকার তিন শতাধিক পরিবার অগ্রদূত ফাউন্ডেশনের পুকুরের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় প্রায় তিন মাস ধরে পিএসএফটি অকেজো হয়ে আছে। তাই মানুষ বাধ্য হয়ে খালের লবণাক্ত পানি ব্যবহার করছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, শরণখোলার তীব্র পানি সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং স্থায়ী সমাধানে প্রকল্প গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। এছাড়া বাগেরহাট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ বেসরকারি সংস্থাগুলোকে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর