যৌতুক আর পরকিয়া প্রেমের ঘটনায় স্ত্রী হত্যার ঘটনার মামলায় স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার (১ মে) দিবাগত রাতে স্ত্রী হত্যার ঘটনার মামলায় স্বামী জুয়েল ইসলামকে আটক করা হয়। রবিবার (২ মে) কোর্টের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে প্রেরন করে পুলিশ।
জানা যায়, দিনাজপুর সদরের শেখপুরা ইউনিয়নের ১৭নং রেলঘুন্টি এলাকার বাসিন্দা মানিক হোসেনের পুত্র সবজি ও মুদি ব্যবসায়ী মোঃ জুয়েল ইসলামের সাথে ২০১৬ সালে বিবাহ হয় শহরের নিমনগর শিপাহীপাড়া মহল্লার বাসিন্দা মৃত. মুন্নার কন্যা নাজনিন আক্তার বৃষ্টির। ৫ বছরের সংসারে তাকে এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী জুয়েল ইসলাম যৌতুকের জন্য প্রায় বৃষ্টির উপর অমানবিক নির্যাতন করে আসছিল। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ার কারণে স্ত্রী বৃষ্টি সব নিরবে সহ্য করে।
এ বিষয়ে পারিবারিক ভাবে কয়েকবার শালিস বৈঠক হলেও স্বামী জুয়েল সামান্য কারণে প্রতিনিয়ত নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। পরে স্বামী জুয়েল যৌতুকের লোভে পরকিয়া প্রেমের সাথে জড়িয়ে পরে এবং মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সময় কথা বলতো অন্য নারীর সঙ্গে। স্ত্রী বৃষ্টি জানতে পেরে প্রতিবাদ করলে তার উপর নির্যাতন করতো তার স্বামী। ঘটনার দিন ৮ এপ্রিল রাতে স্বামী জুয়েল ইসলাম এ ব্যাপারে সারারাত ধরে নির্যাতন করলে স্ত্রী বৃষ্টি মারা যায়। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে পরের দিন সকালে প্রতিবেশীদের এবং স্ত্রীর পরিবারের লোকজনদের জানায় বৃষ্টি আত্মহত্যা করেছে।
বৃষ্টির বাড়ির লোকজন ছুটে এসে দেখে সে গলায় দড়ি দেয়া অবস্থায় ঝুলছে। তার গায়ে বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে সন্দেহ হওয়ার কারণে কোতয়ালী থানায় বৃষ্টির মা ইয়াসমিন বেগম বাদী হয়ে জুয়েল ইসলামকে প্রধান আসামি এবং ভাই রুবেল ইসলাম, পিতা মোঃ মানিক হোসেন, মা রুখসামা বেগমকে সহযোগী আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। থানা কর্তৃপক্ষ ইউডি মামলা দায়ের করলেও পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট আসা পর্যন্ত হত্যা মামলা হিসেবে রুজু করেনি। গতকাল শনিবার (১ মে) রিপোর্ট এলে পুলিশ মামলাটি রজু করে। মামলা রুজুর সাথে জুয়েল ইসলামকে গ্রেফতার করলে বাকি ৩ আসামি বাড়ী থেকে পালিয়ে যায়।
এদিকে, বাদী মা ইয়াসমিন বেগম তার কন্যা নাজনিন আক্তার বৃষ্টির হত্যার সাথে জড়িত তার স্বামী জুয়েলসহ অপর আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসির