যশোরে আদালতে যাওয়ার পথে আইনজীবীর কাছ থেকে রাজু বিশ্বাস টুটু নামে এক হত্যা মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যশোর জেলা জজ কোর্টের সামনের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী তাজমিলুর রহমান সরদার স্বপন।
আসামি রাজু বিশ্বাস যশোরের অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী গ্রামের ভ্যানচালক শুকুর আলী হত্যা মামলার একমাত্র আসামি। অবশ্য পরে অভয়নগর থানা পুলিশ ওই আসামিকে রাস্তা থেকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে।
আইনজীবী তাজমিলুর রহমান বলেন, ‘রাজু বিশ্বাস আদালতে আত্মসমর্পণ করার জন্য রবিবার আমার কাছে এসেছিলেন। ওকালতনামায় স্বাক্ষরসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি শেষে আমি তাকে নিয়ে আইনজীবী সমিতি থেকে আদালতে যাচ্ছিলাম। জজ কোর্টের সামনের রাস্তায় পৌঁছাতেই একদল লোক আমাদের ঘিরে ধরে। এরপর তারা ধস্তাধস্তি করে জোরপূর্বক রাজু বিশ্বাসকে একটি গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়। আমি নিজের পরিচয় দিয়ে তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা হুমকি-ধামকি দিয়ে চলে যায়।’
তাজমিলুর রহমান আরও বলেন, ‘আমি আদালতে গিয়ে বিচারককে বিষয়টি অবহিত করেছি এবং রাজু বিশ্বাসকে উদ্ধারে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করছি’।
এ বিষয়ে যশোর কোতয়ালী থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা এখনো জানি না। পুলিশের কেউ নিয়েছে বলেও জানি না। আমার থানার কেউ এ ধরনের কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি।’
তবে পরে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা অভয়নগর থানার একটি হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেফতার করেছি। দুই মাস ধরে তাকে খোঁজা হচ্ছিল। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বেলা পৌনে ১১টার দিকে যশোর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে আসামি অভয়নগর থানা হেফাজতে রয়েছে, সোমবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’ ওসি বলেন, ‘আমরা আসামিকে আইনজীবী সমিতি বা আদালত চত্বর থেকে ধরিনি, রাস্তা থেকে গ্রেফতার করেছি।’
জানা গেছে, গত ৩ এপ্রিল শুকুর আলী নামে এক ব্যক্তি রাজু বিশ্বাসের ভ্যান-রিকশা মেরামতের দোকানে যান। এরপর তিনি সেখানে নিজের ভ্যান মেরামত করে মজুরির ৩০ টাকা সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে দেওয়ার কথা বলে চলে যান। সন্ধ্যায় রাজু বিশ্বাস তার কাছে পাওনা টাকা চাইলে দুইজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।
এক পর্যায়ে রাজু বিশ্বাস হাতে থাকা রেঞ্জ দিয়ে শুকুর আলীর মাথায় আঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা শুকুর আলীকে উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় শুকুর আলীর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে রাজু বিশ্বাসকে একমাত্র আসামি করে থানায় মামলা করেন। এরপর থেকেই রাজু বিশ্বাস পলাতক ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই