বান্দরবানে হঠাৎ কলেরা ও ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার ৫নং কুরুকপাতা ইউনিয়নের এ রোগে মৃত্যু হয়েছে আট জনের। এখনো আক্রান্ত রয়েছেন ১৩৬ জন। খবর পেয়ে চিকিৎসা সহায়তার হাত বাড়িয়েছে সেনাবাহিনী।
এছাড়া সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ওই এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে ফিল্ড হাসপাতালও। এরই মধ্যে রোগ নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী ও জেলা সিভিল সার্জেনের ৪টি বিশেষ চিকিৎসা টিম।
বান্দরবান সিভিল সার্জেন সূত্রে জানা যায়, বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার ৫নং কুরুকপাতা ইউনিয়নের মাংরুম, ম্যানলিউ এবং সমর্থং পাহাড়ি পল্লীতে হঠাৎ কলেরার ও ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বান্দরবান জেলা শহর থেকে দুর্গমতা ও নেটওয়ার্ক না থাকার কারণে দেরিতে খবর পায় স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
কিন্তু এরই আগেই এ রোগে মৃত্যু হয় ৮ জনের। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ১৩৬ জন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আওতাধীন সদর দপ্তর ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের নির্দেশনায় ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট হেলিকপ্টারে বিশেষ চিকিৎসা টিম নিয়ে যায়। দ্রুত আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া বান্দরবান সিভিল সার্জেনের পক্ষ থেকেও প্রেরণ করা হয় ৩টি চিকিৎসা টিম।
এ ব্যাপারে বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. অং সুই প্রু মারমা জানান, বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার ৫নং কুরুকপাতা ইউনিয়নের মুরং জনগোষ্ঠীর বসবাস। ইউনিয়নটি খুবই দুর্গম। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। নেই মোবাইল নেটওয়ার্কও। যার কারণে আলীকদম উপজেলার ৫নং কুরুকপাতা ইউনিয়নের কলেরা ও ডায়রিয়ার রোগের প্রাদুর্ভাবের খবর একটু দেরিতে পেয়েছি। তবে খবর পাওয়ার সাথে সাথে ৩টি মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে ওই এলাকায়। একই সাথে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে সেনাবাহিনীও। বর্তমানে রোগ নিয়ন্ত্রণে আছে।
বান্দরবান আলীকদম উপজেলার সেনা জোনের জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মোহাম্মদ মনজুরুল হাসান জানান, আলীকদম উপজেলার ৫নং কুরুকপাতা ইউনিয়নে স্থানীয়দের স্বাস্থ্য পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়াতে সুচিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আওতাধীন সদর দপ্তর ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের নির্দেশনায় বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের উদ্যোগে একটি সামরিক মেডিক্যাল টিম এবং স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি বেসামরিক বিশেষজ্ঞ দলকে সামরিক হেলিকপ্টার যোগে প্রেরণ করা হয়।
একই সাথে জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিপুল সংখ্যক জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, কলেরা স্যালাইন, খাবার স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি হেলিকপ্টার যোগে প্রেরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে যেকোনো সহায়তায় ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর