বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার
শিরোনাম
- আমার ছেলের খুনীর ফাঁসি যেন দেখে যেতে পারি: আবু সাঈদের বাবা
- দিল্লি বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫, গ্রেফতার আরও এক কাশ্মীরি
- মালয়েশিয়ায় শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন সাইবারজায়া ইউনিভার্সিটি
- আফ্রিকার ছয় দেশে আছে রুশ সেনার উপস্থিতি: রাষ্ট্রীয় টিভি
- ‘খালেদা জিয়াকে দেশের সেরা জয় উপহার দিতে চাই’
- উইঘুর যোদ্ধাদের চীনের কাছে হস্তান্তর করবে সিরিয়া
- ‘একটি দল ক্ষমতায় যেতে প্রলাপ বকছে’
- সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাশে থাকবে চীন
- বগুড়ায় কোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান
- শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে যা বলল ভারত
- মোংলায় জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ বিষয়ক সমন্বয় সভা
- আকাশ প্রতিরক্ষা ও যুদ্ধবিমান চুক্তি চূড়ান্ত করতে ফ্রান্সে জেলেনস্কি
- অস্ট্রেলিয়ায় বিএনপির জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপন
- ভারতের চা, মশলা, আমসহ কয়েকটি পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহার করলেন ট্রাম্প
- নওগাঁর মান্দায় ধানের শীষে ডা. টিপুর নির্বাচনী পথসভা
- পাঙ্গাস পোনা শিকারের দায়ে জেলের কারাদণ্ড
- পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মিলন কারাগারে
- রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
- নির্বাচনের আগেই হাসিনাকে দেশে এনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি সারজিসের
- কলাপাড়ায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ৫ জন হাসপাতালে
লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
অনলাইন ভার্সন
ভরা মৌসুমে মেঘনা নদীতে মিলছে না কাঙ্খিত রুপালি ইলিশ। এতে করে স্থানীয় অর্ধ লক্ষাধিক জেলে ও মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের দিন কাটছে এখন চরম হতাশায়। পরিবার পরিজন নিয়ে চলমান লকডাউনে ভালো নেই তারা। কোন সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাদের। এদিকে নদীতে ইলিশ না পাওয়ার কারণ হিসেবে এ বছর অতি খরা, জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাব ও নাব্যতা সঙ্কটকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এ বিশাল সম্প্রদায়ের জীবন জীবিকায় অন্য দুটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানালেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
জানা যায়, জেলা মৎস্য অফিসের তালিকা অনুযায়ী জেলার ৫টি উপজেলায় ৪২ হাজার জেলে রয়েছে। এর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। তবে এ জেলায় আড়ৎদার ও মৎস্য ব্যবসায়ীসহ অর্ধলক্ষাধিক জনগোষ্ঠি জেলে ও মৎস্যজীবি হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করছেন। জেলায় চলতি বছর ইলিশ আহরণের লক্য মাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ হাজার মেট্রিক টন। এখানের ইলিশ সুস্বাধু হিসেবে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ অন্যান্য জেলায় এর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
মৎস্য অফিসের এমন তথ্য নিয়ে সরেজমিনে যায় এই প্রতিবেদক। সোমবার (২৬ জুলাই) বিকালে সদর উপজেলার বুড়ির ঘাট, মজু চৌধুরীর হাট, কমলনগরের মতির হাট, বাত্তির ঘাটসহ বেশ কয়েকটি মাছ ঘাট ঘুরে দেখা গেছে পর্যাপ্ত ইলিশ নেই। এসব এলাকার উক্ত ঘাট গুলোতে প্রতি বছর এ সময়ে মৎস্যজীবী জেলে আড়ৎদার ও ক্রেতারা ইলিশ নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করতেন বলে জানান স্থানীয়রা। ইলেশের ভরা মৌসুমে এসে এবার ভিন্ন চিত্র এসব এলাকায়। আড়ৎদারদের কেউ কেউ অলস সময় পার করছেন এখন। আবার কেউ অন্য ছোট মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাক্সের আঙ্গিনায় মুঠোফোন হাতে গেমস খেলা আর কেউ ঘুমিয়ে দিন কাটাতে দেখা যায়।
এসব এলাকার জেলেরা নৌকা, ট্রলার ও জাল নিয়ে নদীতে যাওয়ার প্রস্তুতি আর নদীতে অবস্থানের দৃশ্যও চোখে পড়ে। তবে তাদের জালে কাঙ্খিত ইলিশ মিলছেনা বলে জানান তারা।
স্থানীয় জেলে আব্দুল করিম জয়নাল মিয়া, আবু মাঝিসহ বেশ কয়েকজন জেলের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, প্রতিদিন ভোরে একটি ট্রলারে ৮ থেকে ১০ জন করে জেলে জাল নিয়ে নদীতে যান। ট্রলারের তেল ও নিজেদের খাবার খরচে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ হয় তাদের। কিন্তু নদীতে ফেলা তাদের জালে কাঙ্খিত ইলিশ মিলছেনা এবার। এতে করে খরচ উঠাতেও হিমশিম খেতে হয় তাদের। কেউ কেউ জানান, ধার দেনা করে নদীতে এসে মাছ না পেয়ে ঋণের জালে আবদ্ধ হয়ে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে এখন। কারো কারো অভিযোগ নদীতে মাছ নেই, চলমান লকডাউনে উপরে কাজ নেই, ঘরে চাল-ডাল নেই, সরকারি ত্রাণও মিলেনা তাদের। এমন পরিস্থিতিতে পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে থাকতে হয় বলে জানান অনেকে।
স্থানীয় আড়ৎদার ফিরণ, রিয়াজ ও হেলাল জানান, অন্যবারের তুলনায় ইলিশ মাছ একেবারেই কম। অনেক জেলে নদী থেকে শুন্য হাতে ফিরে। কেউ কেউ দু-চারটি ইলিশ নিয়ে ফিরলেও খরচ পোষায়না। দু-চারটি ইলিশ দেখা গেলেও অন্যবারের তুলনায় ইলিশ একবারেই নেই বললেই চলে। যা আসে তার মধ্যে বড় ইলিশ ১২শ’ থেকে১৩শ’ টাকা কেজি, মাঝারিটা ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা, ছোট ইলিশ ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তারা।
এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এবার ২৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো আশানুরুপ ইলিশ মিলছে না। এর কারণ হিসেবে এ কর্মকর্তা বলছেন, এ বছর অতি খরা, জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাব ও নদীতে নাব্যতা সঙ্কট রয়েছে তাই ইলিশ পাওয়া যাচ্ছেনা। তবে আগষ্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ভালো ইলিশ পাওয়া যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। চলমান পরিস্থিতিতে অর্ধলক্ষাধিক জেলে সম্প্রদায়ের দুর্দিনের কথা স্বীকার করে এ কর্মকর্তা আরো বলেন, জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য দু’টি (টেকসই ব্যবস্থাপনা ও ইলিশ উন্নয়ন)প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। যা বাস্তবায়ন হলে তাদের শুধু নদীর মাছের উপরই নির্ভর থাকতে হবে না। তাদের জীবন বদলে যাবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
এই বিভাগের আরও খবর