বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার
শিরোনাম
- দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ব্যবসায়ী নিহত
- এসএসসিতে ফেল : বরিশালে পাঁচ ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা, দুইজনের মৃত্যু
- এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস না পেয়ে বগুড়ায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
- টানা বৃষ্টির প্রভাব রাজধানীর বাজারে
- এসএসসিতে অকৃতকার্য হওয়ায় গেন্ডারিয়ায় শিক্ষার্থীর 'আত্মহত্যা'
- সেই আলফি পাস করেছে
- এনবিআরের প্রথম সচিব তানজিনা বরখাস্ত
- ফ্যাসিবাদবিরোধীদের ঐক্য অটুট রাখার আহ্বান মামুনুল হকের
- দুদকের মামলায় জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বারকাত গ্রেফতার
- মাকে মারধর করায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল স্বজনরা
- ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা খাতে আরও বিনিয়োগে জেলেনস্কির আহ্বান
- আবারও ইসরায়েলি বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হুথিদের
- কুয়ালালামপুরে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিরল বৈঠক
- লঙ্কানদের ১৫৫ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল টাইগাররা
- ট্রাম্পের লবিস্টদের লাখ লাখ ডলার দিচ্ছে দরিদ্র দেশগুলো
- নিরাপত্তা খাতে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সহযোগিতার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
- জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সম্প্রচার-ব্যবস্থা যুগোপযোগী করা হবে : তথ্য উপদেষ্টা
- ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলি বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
- কারাগারে একক সেলে নেওয়া হলো সাবেক আইজিপি মামুনকে
- উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা আবশ্যক : প্রধান উপদেষ্টা
লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
অনলাইন ভার্সন

ভরা মৌসুমে মেঘনা নদীতে মিলছে না কাঙ্খিত রুপালি ইলিশ। এতে করে স্থানীয় অর্ধ লক্ষাধিক জেলে ও মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের দিন কাটছে এখন চরম হতাশায়। পরিবার পরিজন নিয়ে চলমান লকডাউনে ভালো নেই তারা। কোন সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাদের। এদিকে নদীতে ইলিশ না পাওয়ার কারণ হিসেবে এ বছর অতি খরা, জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাব ও নাব্যতা সঙ্কটকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এ বিশাল সম্প্রদায়ের জীবন জীবিকায় অন্য দুটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানালেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
জানা যায়, জেলা মৎস্য অফিসের তালিকা অনুযায়ী জেলার ৫টি উপজেলায় ৪২ হাজার জেলে রয়েছে। এর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। তবে এ জেলায় আড়ৎদার ও মৎস্য ব্যবসায়ীসহ অর্ধলক্ষাধিক জনগোষ্ঠি জেলে ও মৎস্যজীবি হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করছেন। জেলায় চলতি বছর ইলিশ আহরণের লক্য মাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ হাজার মেট্রিক টন। এখানের ইলিশ সুস্বাধু হিসেবে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ অন্যান্য জেলায় এর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
মৎস্য অফিসের এমন তথ্য নিয়ে সরেজমিনে যায় এই প্রতিবেদক। সোমবার (২৬ জুলাই) বিকালে সদর উপজেলার বুড়ির ঘাট, মজু চৌধুরীর হাট, কমলনগরের মতির হাট, বাত্তির ঘাটসহ বেশ কয়েকটি মাছ ঘাট ঘুরে দেখা গেছে পর্যাপ্ত ইলিশ নেই। এসব এলাকার উক্ত ঘাট গুলোতে প্রতি বছর এ সময়ে মৎস্যজীবী জেলে আড়ৎদার ও ক্রেতারা ইলিশ নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করতেন বলে জানান স্থানীয়রা। ইলেশের ভরা মৌসুমে এসে এবার ভিন্ন চিত্র এসব এলাকায়। আড়ৎদারদের কেউ কেউ অলস সময় পার করছেন এখন। আবার কেউ অন্য ছোট মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাক্সের আঙ্গিনায় মুঠোফোন হাতে গেমস খেলা আর কেউ ঘুমিয়ে দিন কাটাতে দেখা যায়।
এসব এলাকার জেলেরা নৌকা, ট্রলার ও জাল নিয়ে নদীতে যাওয়ার প্রস্তুতি আর নদীতে অবস্থানের দৃশ্যও চোখে পড়ে। তবে তাদের জালে কাঙ্খিত ইলিশ মিলছেনা বলে জানান তারা।
স্থানীয় জেলে আব্দুল করিম জয়নাল মিয়া, আবু মাঝিসহ বেশ কয়েকজন জেলের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, প্রতিদিন ভোরে একটি ট্রলারে ৮ থেকে ১০ জন করে জেলে জাল নিয়ে নদীতে যান। ট্রলারের তেল ও নিজেদের খাবার খরচে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ হয় তাদের। কিন্তু নদীতে ফেলা তাদের জালে কাঙ্খিত ইলিশ মিলছেনা এবার। এতে করে খরচ উঠাতেও হিমশিম খেতে হয় তাদের। কেউ কেউ জানান, ধার দেনা করে নদীতে এসে মাছ না পেয়ে ঋণের জালে আবদ্ধ হয়ে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে এখন। কারো কারো অভিযোগ নদীতে মাছ নেই, চলমান লকডাউনে উপরে কাজ নেই, ঘরে চাল-ডাল নেই, সরকারি ত্রাণও মিলেনা তাদের। এমন পরিস্থিতিতে পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে থাকতে হয় বলে জানান অনেকে।
স্থানীয় আড়ৎদার ফিরণ, রিয়াজ ও হেলাল জানান, অন্যবারের তুলনায় ইলিশ মাছ একেবারেই কম। অনেক জেলে নদী থেকে শুন্য হাতে ফিরে। কেউ কেউ দু-চারটি ইলিশ নিয়ে ফিরলেও খরচ পোষায়না। দু-চারটি ইলিশ দেখা গেলেও অন্যবারের তুলনায় ইলিশ একবারেই নেই বললেই চলে। যা আসে তার মধ্যে বড় ইলিশ ১২শ’ থেকে১৩শ’ টাকা কেজি, মাঝারিটা ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা, ছোট ইলিশ ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তারা।
এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এবার ২৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো আশানুরুপ ইলিশ মিলছে না। এর কারণ হিসেবে এ কর্মকর্তা বলছেন, এ বছর অতি খরা, জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাব ও নদীতে নাব্যতা সঙ্কট রয়েছে তাই ইলিশ পাওয়া যাচ্ছেনা। তবে আগষ্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ভালো ইলিশ পাওয়া যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। চলমান পরিস্থিতিতে অর্ধলক্ষাধিক জেলে সম্প্রদায়ের দুর্দিনের কথা স্বীকার করে এ কর্মকর্তা আরো বলেন, জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য দু’টি (টেকসই ব্যবস্থাপনা ও ইলিশ উন্নয়ন)প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। যা বাস্তবায়ন হলে তাদের শুধু নদীর মাছের উপরই নির্ভর থাকতে হবে না। তাদের জীবন বদলে যাবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
এই বিভাগের আরও খবর