৩ আগস্ট, ২০২১ ০৯:৫৮

বাঁশের সাঁকোই তাদের একমাত্র ভরসা

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ

বাঁশের সাঁকোই তাদের একমাত্র ভরসা

কারো টাকা কিংবা সরঞ্জাম। কেউ দেন শ্রম। বাঁশ, বেত, রশি, আর চট দিয়ে বছরে দু’বার অস্থায়ী সাঁকো তৈরি করেন তারা। একাধিকবার দেয়া হয় জোড়াতালিও। তবুও মাঝে মধ্যে ভেঙে গিয়ে ব্যাহত হয় চলাচল। ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হন কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ কর্মজীবী মানুষ।

একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এভাবেই চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারি ইউনিয়নের রামধানা শেখের গাঁও পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দারা। সাঁকো দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা হলেও বর্ষায় ভোগান্তি বাড়ে দ্বিগুণ। খাল পেরিয়ে গভীর কাদাজল মাড়িয়েই গন্তব্যে যান তারা। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মূল সড়ক থেকে একটি মেঠো পথ প্রবেশ করেছে শেখের গাঁও পশ্চিমপাড়ায়। পাড়া শেষে এটি মিলিত হয়েছে অলংকারি প্রাইমারি স্কুল সড়কে। একটু অগ্রসর হলেই চোখে পড়ে খালের উপর তৈরি প্রায় ৪৫ ফুট দীর্ঘ ও ৫ ফুট প্রস্থের একটি বাঁশের সাঁকো। সাঁকো পেরিয়েই কাদাজলের গভীর খাদ। এগুলো মাড়িয়ে চলাচল করতে দেখা যায় পাড়ার মানুষদের।

কথা হয় পাড়ার বাসিন্দা মো. বশর আলীর (৬৫) সাথে। তিনি জানান, আমাদের পাড়ার প্রবেশ পথের মাঝ দিয়েই প্রবাহিত গোয়ালি খাল। এক সময় কলা গাছের ভেলায় ও কয়েকটি বাঁশ একসাথে জুড়ে দিয়ে তৈরি করা সাঁকোতে পার হতাম। সাঁতরে নেয়া হতো গবাদি পশু। শিশু শিক্ষার্থী ও বয়স্কদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হলে ধরণ পাল্টানো হয় সাঁকোর। আড়াআড়ি বাঁশের ফলা জুড়ে, তিন হাত প্রস্থের সাঁকো তৈরি করা হয়।

বিশ বছর ধরে এ ভাবেই চলছি আমরা। পড়শিদের আপত্তি ও নানা জটিলতায় হচ্ছেনা সেতু ও সড়কে মাটি ভরাট। ফলে চরম ভোগান্তি হচ্ছে আমাদের। এক সময় দু’দুবার সেতু নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন হয়। কিন্তু প্রতিবেশী রমজান ও পেচন গংরা খালপাড়ের জায়গা নিজেদের দাবী করে আপত্তি দিলে ভেস্তে যায় সেতুর প্রক্রিয়া।
 
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল বলেন, এ স্থানে দু’বার সেতু নির্মাণ প্রকল্প সরকারি ভাবে অনুমোদন হয়। কিন্তু স্থানীয় ক’জনের আপত্তির কারণে সেতু না করেই ফেরত দিতে হয় বরাদ্দের অর্থ।  

এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরপ্রশাসক সুমন চন্দ্র দাস ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর